বিশেষ প্রতিনিধিঃ
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এর হস্তক্ষেপে আত্মহত্যা থেকে রক্ষা পেল ৫ জনের জীবন। গত শুক্রবার রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে আফজাল হোসেন ফকির (৪৫)এর ফেসবুক আইডি থেকে আত্মহত্যার স্ট্যাটাস দেওয়া হয়। মুহূর্তের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। পরে বিষয়টি নজরে আসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাফিজা জেসমিন ও ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি পীরজাদা শেখ মোহাম্মদ মোস্তাছিনুর রহমানের। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওসিকে অনুরোধ জানান। তৎক্ষণাৎ ওসি তার একটি টিম নিয়ে দ্রুত আফজাল হোসেনের বাড়িতে হাজির হন। ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আফজাল হোসেন হিমেল, তার স্ত্রী মীম আক্তার এবং তিন মেয়ে হুমায়রা আক্তার মৌমিতা, জান্নাতুল মুনতাহা ইলমা, সিদরাতুল মুনতাহা মায়মুনাকে নিরাপত্তার স্বার্থে হেফাজতে নিয়ে আসেন। পুলিশের এমন হস্তক্ষেপে বেঁচে যায় পাঁচটি প্রাণ। আফজাল হোসেনের বাড়ি উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের হারুয়া গ্রামে।
আফজাল হোসেন হিমেলের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো; ‘আজ রাত এক সাথে পাঁচজন আত্মহত্যা করতে পারে। বাবা, মাসহ তিন মেয়ে। সবার কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’
আফজাল হোসেন ফকির হিমেল বলেন, ‘আমার বাবা আমাকে দেখতে পারেন না। আমার তিনটা সন্তানের সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করেন। বাড়ির একটি ঘর ও পারিবারিক নানান জটিলতার কারণে আমি সপরিবারে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। পরে ইউএনও স্যার ও ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি স্যার আমাকে বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে আমার পরিবারসহ হেফাজতে নিয়ে আসেন। সেই সঙ্গে আমার পরিবার ও এলাকাবাসী নিয়ে পারিবারিক সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে আমি আমার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসি।’
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, শুনেছি হিমেল একাধিক বিয়ে করায় তার পরিবারের লোকজন তাকে দেখতে পারে না। হয়তো এ কারণেই সে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
ঘটনার পরদিন গতকাল শনিবার ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি মোস্তাছিনুর রহমান ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য এবং আফজাল হোসেনের পরিবার, তার বাবা-মাসহ কয়েকজনকে নিয়ে বসে বিষয়টির একটি সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা করেন।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার ওসি পি এস এম মোস্তাছিনুর রহমান বলেন, পারিবারিক সমস্যার কারণে আফজাল হোসেন সপরিবারে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের হেফাজতে আনে। স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার পরিবারের লোকজনকে ডেকে বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধানের চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হাফিজা জেসমিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ভুক্তভোগী পরিবারটি পারিবারিক কলহের জেরে এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। উপজেলা প্রশাসন ও থানা-পুলিশের তাৎক্ষণিক উদ্যোগে এমন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।