স্টাফ রিপোর্টার:মোঃ মেহেদী হাসান
ঈশ্বরদীতে অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক প্রয়াত মোহাম্মাদ হবিবুল্লাহ’র স্ত্রী হাজেরা বেগম হত্যার রহুস্য গত ৩ দিনেও উদ্ধার হয়নি। গ্রেফতারও হয়নি কেউ। তবে হত্যার রহুস্য উৎঘাটনের অনেকগুলো বিষয়ের দিকে নজর দিয়ে রহুস্য উৎঘাটনের চেষ্টা করছে পুলিশ। এর আগে সোমবার ইফতারের পুর্বে ঈশ্বরদী ইপিজেড মোড়স্থ নিজবাড়িতে রহস্যজনকভাবে হত্যার শিকার হন হাজেরা খাতুন (৭৬)। গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
নিহতের আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশিরা জানান, অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক মোহাম্মাদ হবিবুল্লাহ এর মৃত্যুর পর নিহত হাজেরা খাতুন একাই ইপিজেড মোড়স্থ নিজ বাড়িতে থাকতেন। তাঁর ৩ ছেলে ও ৪ মেয়ে রয়েছে। দুই মেয়ে বিদেশ ও অন্যরা ঢাকায় বসবাস করেন। মাঝে মধ্যে ঢাকায় ছেলে মেয়েদের সাথেও থাকতেন। আবার নিজ বাড়িতেও থাকতেন। তাঁকে দেখভাল করার জন্য সব সময়ের জন্য একজন নারী ও একজন দুইজন পুরুষ গৃহকর্মী রাখা ছিলো।
সূত্র মতে, ঘটনার দিন সকালে নিহত হাজেরা খাতুনকে প্রতিবেশিরা নিজ বাড়ির সামনে বাগানের ভিতর ঘুরতে দেখেন। সন্ধ্যায় নিহতের ছেলে ও মেয়েরা মোবাইল ফোনে তাঁদের মা হাজেরা খাতুনকে না পেয়ে তাঁরা প্রতিবেশিসহ তাঁদের মামা হবিবুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ইফতারের পর তাঁরা হাজেরার বাড়িতে এসে বাহির থেকে দরজায় তালামারা দেখেন। পরে তালা ভেঙ্গে কক্ষে ঢুকে তাঁরা মেঝেতে কাপড়ে ঢাকা রক্তাত্ব অবস্থায় লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন।
থানা সূত্র জানায়, নিহত হাজেরা খাতুনের হত্যার রহুস্য উৎঘাটনের জন্য বাড়ির গৃহকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কয়েকজন সন্দেহভাজন ব্যক্তির মোবাইল ফোনের কললিস্ট পরীক্ষা করা হচ্ছে। ঘটনার থেকেই ওইসব সন্দেহভাজনদের মোবাইল ফোনের সিমগুলো বন্ধ রয়েছে। তবে হত্যা ও এলোমেলো করে রাখা ঘরের আলমারিসহ আসবাপত্রে আলামত দেখে মনে হচ্ছে ঘরে স্বর্ণালংকারসহ নগদ অর্থ আছে এরুপ ভেবে সেগুলো লুট করতেই হত্যাকারীরা একা থাকা হাজেরা খাতুনের কক্ষে প্রবেশ করে। তাদের লুটপাটে বাধা দিতে গিয়েই হয়তবা হাজেরা খাতুন নির্মম হত্যার শিকার হয়ে থাকতে পারেন।
ছোট ভাই পাকশী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা হাবিবুল ইসলাম হব্বুল জানান, আমার বোন হাজেরা খাতুন ও ভগ্নিপতি অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক মোহাম্মাদ হবিবুল্লাহ ইপিজেড মোড়স্থ নিজ বাড়িতে থাকতেন। কোথাও গেলে দুজন এক সঙ্গেই যেতেন। ভগ্নিপতি হবিবুল্লাহ মৃত্যুর পর তাঁর বোন বাহিরে তেমন একটা বের হতেন না। জানামতে তাঁর সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিলো না। তারপরও কেনো তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো তা বোধগম্য নয়।
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী জানান, পুলিশের সিরাজগঞ্জ ক্রাইমসিন থেকে প্রাপ্ত নমুনা এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করতে প্রশাসনের কয়েকটি ইউনিট নিরলস ভাবে কাজ করছে। ক্রাইমসিন থেকে প্রাপ্ত নমুনা এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যার সময় কারা ওই বাড়িতে উপস্থিত ছিলো এবং কারা যাতায়াত করতো এবং তাদের সঙ্গে কাদের যোগাযোগ হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।এই ব্যাপারে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।