স্টাফ রিপোর্টার।।
শুরু হয়েছে রমজানের ঈদের বাজার। নতুন পোশাকে সাজানো হয়েছে গরিবের মার্কেট বলে পরিচিত পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে সুপার মার্কেটের দোকানগুলো। এরই মধ্যে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে থেকে সেইসব দোকানগুলো উচ্ছেদের জন্য করা হয়েছে মাইকিং। সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে আগামী ১০ এপ্রিল স্ব-উদ্যোগে দোকানগুলো সরিয়ে নেওয়া না হলে বিনা নোটিশে উচ্ছেদ অভিযানের মাধ্যমে ভেঙ্গে ফেলা হবে। রেলওয়ের এই ধরণের আকস্মিক উচ্ছেদ মাইকিংয়ে ক্ষুব্ধ বাজারের ব্যবসায়ীরা। দোকান বন্ধ করে উচ্ছেদ বন্ধের দাবীতে স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ নুরুজ্জামান বিশ্বাসের বাড়িতে অবস্থান নেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীসহ ঈশ্বরদী বণিক সমিতির নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে আলোচনা করে দোকানগুলো উচ্ছেদ করা হবে না মর্মে এমপির আশ্বাসে দোকানে ফিরেছেন ব্যবসায়ীরা। বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ঈশ্বরদী রেলওয়ের জায়গার উপর অর্ধশত বছর ধরে চলে আসা গরিবের মার্কেট বলে পরিচিত একসময়ের গাউন মার্কেট বর্তমানে ঈশ্বরদী রেলওয়ে সুপার মার্কেটকে কেন্দ্র করে এসব ঘটনা ঘটে। ঈশ্বরদী শিল্প বণিক সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বাচ্চু জানান, দীর্ঘদিনের পুরনো বাজারের গাউন মার্কেট (ঈশ্বরদী রেলওয়ে সুপার মার্কেট) উচ্ছেদের সময় নির্ধারন করে রেলওয়ে কর্তপক্ষ মাইকিং করিয়েছেন। ঈদের আগে এভাবে উচ্ছেদ মাইকিং করা রেলওয়ের উচিত হয়নি বলে জানান তিনি। আমরা ব্যবসায়ীদের পক্ষে রেলওয়ের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তবে ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে প্রতিবাদ জানান। পরে স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ নুরুজ্জামান বিশ্বাসের বাড়িতে অবস্থান নেন ব্যবসায়ীরা। দোকানগুলো উচ্ছেদ বন্ধের আশ্বাস পেয়ে তারা এমপির বাড়ি ত্যাগ করেন। দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।
পাবনা-৪( ঈশ্বরদী- আটঘরিয়া) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ নুরুজ্জামান বিশ্বাস জানান, দীর্ঘকাল ধরে ঈশ্বরদীবাসী সেখানে দোকান বসিয়ে বেচা কেনা করছে। রেলওয়ের পণ্যবাহী ট্রেনের মালামাল খালাসের জন্য যে পরিমান জায়গা প্রয়োজন তার অনেক রয়েছে। শুধু, শুধু কেনই বা পুরাতন গাউন মার্কেট উচ্ছেদ করবে। রেলওয়ের ডিআরএম’র সঙ্গে আলাপ করে উচ্ছেদ বন্ধের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক ( ডিআরএম ) শাহ সূফি নূর মোহাম্মদ জানান, আগামী রবিবার (১০ এপ্রিল) পর্যন্ত দোকানদারদের সময় দেওয়া হয়েছে ।এই সময়ের মধ্যে যদি নিজেরাই তাদের দোকান ঘর সরিয়ে না নেয় তাহলে রবিবার উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়া রেলওয়ের জায়গা উদ্ধার করা হবে। কারণ সেখানে রেলওয়ের মালবাহী ট্রেনগুলো থেকে মালামাল খালাস ও পরিবহনের কাজের জন্য এখন প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। ডিআরএম আরও জানান, ঈশ্বরদীর পুরাতন গাউন মার্কেটের দোকানিদের নিকট কোনরূপ লীজ দেয়নি রেলওয়ে। নেতারা অবৈধভাবে দখল করে ও ব্যবসায়ীদের নিকট পজিশন বিক্রয় করেছে। আধা পাকা ভবন নির্মাণ করে ব্যবসা করছে। রেলওয়ের জায়গা রেলওয়ের প্রয়োজন। সেটা উচ্ছেদের মাধ্যমে দখলমুক্ত করে রেলওয়র কাজে ব্যবহার করা হবে। এতে রেলওয়ে থেকে ব্যবসায়ীদের কোনরুপ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কোন প্রশ্নই আসেনা। তবে দোকানিদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা প্রতিটি দোকানের বর্গফুট অনুযায়ী প্রতিবছর রেলওয়েকে রাজস্ব প্রদান করে আসছেন বলে জানান ওই মার্কেটের দোকান ব্যবসায়ীরা।