মোঃ হানিফ মাদবর স্টাফ রিপোর্টারঃ
সাধারণ মানুষের কাছে এটি ‘চোখ ওঠা’ রোগ নামে পরিচিত। দেশের নানা প্রান্তে চোখের এ সমস্যা নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ভিড় করছেন রোগীরা। এ রোগটি মূলত ভাইরাসজনিত এবং ছোঁয়াচে।
চোখ ওঠা রোগ কেন হয়ঃ-
এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি তার চোখ স্পর্শ করার পর সেই হাত দিয়ে কোনো একটি জিনিস স্পর্শ করলে এবং পরবর্তীতে সে জিনিসটি যদি অন্য কেউ স্পর্শ করে ও নিজের চোখে হাত দেয়, তাহলে সুস্থ ব্যক্তিটিও এই রোগে আক্রান্ত হয়।
সাধারণত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার কারণে চোখ ওঠা রোগ হয়। আবার কখনো কখনো অ্যালার্জির কারণেও এ রোগ হয়ে থাকে। যে মৌসুমে বাতাসে আদ্রতা বেশি থাকে, সে সময় এ রোগটা বেশি হয়।
কীভাবে ছড়ায়: –
———————————-
সাধারণত কন্টাক্টের মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। যেমন: রোগীর ব্যবহৃত জিনিস (গামছা, তোয়ালে, রুমাল) অন্যরা ব্যবহার করলে এ রোগ ছড়ায়। আবার হ্যান্ড টু আই কন্টাক্টের (হাত না ধুয়ে চোখ ছুঁলে) মাধ্যমেও ছড়ায়। অর্থাৎ আক্রান্ত রোগীর ব্যবহৃত জিনিস কেউ ধরার পর যদি না ধুয়ে হাত চোখে দেয়।
সারতে কতদিন লাগে:
সাধারণত ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যেই এ রোগ ভালো হয়ে যায়। তবে, কারো কারো ক্ষেত্রে হয়তো ১৫ দিনের মতো সময় লাগতে পারে।
লক্ষণঃ-
১.চোখ লাল হয়ে যায়। সাধারণত প্রথমে এক চোখ লাল হয়, পরে দুই চোখ লাল হয়ে যায়।
২. চোখ দিয়ে পানি পড়ে।
৩. চোখে অস্বস্তিবোধ হয় (খচখচ করে)
৪. চোখের পাতা ফুলে যায় ও চোখে ব্যথা হয়
৬. আলো সহ্য হয় না, চোখে পিচুটি (কেতুর) হয়।
৮.চোখে হালকা জ্বালাপোড়া হয় ও ঘুম থেকে ওঠার পর চোখের পাতা লেগে থাকে এবং চোখ খোলতে কষ্ট হয়।
১০. কারো চোখের কর্নিয়া আক্রান্ত হলে তারা চোখে ঝাপসা দেখেন।
চিকিৎসা, প্রতিরোধ ও সতর্কতা
১. সাধারণত এমনিতেই এ রোগ ভালো হয়ে যায়।
২. প্রয়োজনে আর্টিফিশিয়াল টিয়ার, অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ডোজ মেনে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে, সেক্ষেত্রে চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে তা ব্যবহার করতে হবে।
৩. হাত দিয়ে চোখ চুলকানো যাবে না ও রোগীকে কালো চশমা পরতে হবে।
৫. ভিড় এড়িয়ে চলতে হবে ও চোখ মোছার জন্য আলাদা কাপড় ব্যবহার করতে হবে।
৭.চোখ ওঠা রোগীদের আলাদা থাকতে হবে, যাতে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে না পড়ে।
৮. চোখে পানি ব্যবহার করা যাবে না।
৯.অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্তরা ওষুধের দোকান থেকে স্টেরয়েড জাতীয় ড্রপ নেন। কিন্তু এ জাতীয় ড্রপ বেশি দিলে চোখের জটিলতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন: গ্লুকোমায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। নিজে নিজে ওষুধের দোকান থেকে কোনো ধরনের ড্রপ নিয়ে ব্যবহার করা উচিত না। চিকিৎসকরা অবস্থা বুঝে নির্দিষ্ট কিছু রোগীকে স্টেরয়েড জাতীয় ড্রপ দিয়ে থাকেন।