ওবাইদুর রহমান নয়ন , টেকনাফ:
বাংলাদেশ কক্সবাজারের বর্ডার গার্ড রিজিয়নের, রামু সেক্টরের অধীনস্থ, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) স জাগ্রত হয়ে বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের ঞবাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। টেকনাফ ব্যাটালিয়ন সীমান্ত সুরক্ষা ছাড়াও চোরাচালান, মাদকদ্রব্য, অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং আন্তঃ রাষ্ট্রীয় সীমান্ত অপরাধ দমনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে যথাযথ ও কার্যকরীভাবে পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্ব পালন করে বেসামরিক পরিমণ্ডলে ভূয়সী প্রশংসা পেয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৩ এপ্রিল ২০২৩ তারিখ টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি কর্তৃক পরিচালিত পৃথক তিনটি অভিযানে একজন আসামীসহ ২,১০,০০০ (দুই লক্ষ দশ হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ৩৬০ ক্যান আন্দামান গোল্ড বিয়ার উদ্ধার করা হয়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, ১৩ এপ্রিল ২০২৩ তারিখ রাতে টেকনাফ ব্যাটালিয়ান (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ সাবরাং বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-৫ হতে আনুমানিক ০১ কি মি দক্ষিণ দিকে আচারনিয়া নামক এলাকা দিয়ে মাদকের একটি চালান মায়ানমার হতে বাংলাদেশে পাচার হতে পারে। উত্ত সংবাদের ভিত্তিতে সাবরাং বিওপি হতে একটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল বর্ণিত এলাকায় গমন করতা কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে। আনুমানিক ০২৩০ ঘটিকায় টহলদল সীমান্তের শূন্য লাইন হতে ৭০০ মিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দুইজন ব্যক্তিকে নাফ নদী পার হয়ে দুটি বস্তা কাঁধে নিয়ে বর্ণিত স্থানে বেড়ীবাঁধ অতিক্রম করে লবণ মাঠ দিয়ে আসতে দেখে এবং তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় টহলদল তাদেরকে চ্যালের করে। উক্ত ব্যক্তিরা দূর হতে বিজিবি টহলদলের উপস্থিতি অনুধাবন করা মাত্রই তাদের কাঁধে থাকা বড়াগুলো ফেলে রাতের অন্ধকারের সুযোগে দ্রুত দৌঁড়ে নাফ নদীতে ঝাপ দিয়ে মায়ানমারের অভ্যন্তরে পালিয়ে যায়। অতঃপর টহলদল উল্লেখিত স্থানে পৌঁছে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করে চোরাকারবারীদের ফেলে যাওয়া গামছা দিয়ে মোড়ানো দুটি প্লাষ্টিকের বস্তা উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত বস্তার ভিতর হতে ২,০০,০০০ (দুই লক্ষ) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট (মালিকবিহীন অবস্থায়) জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে টহলদল কর্তৃক উক্ত এলাকায় ১৩ এপ্রিল ২০২৩ তারিখ ০৩৪৫ ঘটিকা পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করা হলেও কোন চোরাকারবারী কিংবা তাদের সহযোগীকে আটক করা সম্ভব হয়নি। চোরাকারবারীদেরকে সনাক্ত করার জন্য অত্র ব্যাটালিয়নের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সসস
উদ্ধার-২। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, ১৬ এপ্রিল ২০২৩ তারিখ টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ দমদমিয়া বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-৯ হতে আনুমানিক ১.৫ কিঃ মি: লুকায়িত রয়েছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে ০৯০০ ঘটিকায় দমদমিয়া বিওপি’র একটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল বর্ণিত স্থানে গমন করতঃ তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করে সন্দেহভাজন একজন ব্যক্তিকে ঘোরাফেরা অবস্থায় দেখতে পায়। পরবর্তীতে তাকে (মো: আব্দুর তৰুন (১৯), পিতা-মোঃ হোসেন, মাতা হাসিনা খাতুন, ২৭ নম্বর জাদিমোফা এফডিমোন ক্যাম্প, ব্লক-বি/B, থানা-টেকনাফ, জেলা-করাবাজার) আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জালিয়ারদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব পার্শ্বে বালুর নীচে প্লাস্টিকের পলিব্যাগ দিয়ে মোড়ানো একটি পোটলা উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত পোটলা হতে ১০,০০০ (দশ হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়। আটককৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায় যে, উক্ত ইয়াবার চালান মায়ানমার হতে বাংলাদেশে এনে দুইজন পলাতক আসামীর নিকট পৌঁছে দেয়ার নিমিত্তে ৩০,০০০/- (ত্রিশ হাজার) টাকা চুক্তির বিনিময়ে ভোর ০৫০০ ঘটিকায় মায়ানমারের শোয়ারদ্বীপ হতে সাঁতরিয়ে নাফ নদীর শূনা লাইন অতিক্রম করে বাংলাদেশের জালিয়ারদ্বীপে বর্ণিত স্থানে পলাতক আসামীদের নিকট ইয়াবার চালান বুঝিয়ে দেয়ার নিমিত্তে লুকিয়ে রাখে।
উদ্ধার-৩। ১৩ এপ্রিল ২০২০ তারিখ আনুমানিক ০১২৫ ঘটিকায় টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) এর অধীনস্থ শাহপরীরদ্বীপ বিওপি’র একটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল বিআরএম-৪ হতে আনুমানিক ৫০০ গজ দক্ষিণ দিকে আলিয়াপাড়া নামক এলাকায় নাফ নদীর কিনারায় নিয়মিত টহল কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। উক্ত সময় ৪-৫ জন ব্যক্তিকে না নদী পার হয়ে লম্বা কাঁধে নিয়ে বেড়ীবাঁধ সংলগ্ন কেওড়া বাগানের দিকে আসতো দেখে এবং তাদের গতিবিধি সম্মেল কাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে। উক্ত ব্যক্তিরা দূর বিজিবি টহলদলের উপস্থিতি অনুধাবন করা মাত্রই তাদের কাঁধে থাকা বড়াগুলো ফেলে দিয়ে কেওড়া বাগানের ভিতর দিয়ে নাফ নদীতে লাফিয়ে মায়ানমারের দিকে পালিয়ে যায়। অতঃপর টহলদল উল্লেখিত স্থানে পৌঁছে তল্লাশী অভিযান পরিচালনা করে ৫টি প্লাষ্টিকের বস্তা উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত বস্তুর ভিতর হতে ৩৬০ ক্যান আন্দামান গোল্ড বিয়ার (মালিকবিহীন অবস্থায়) জব্দ করা হয়। উক্ত স্থানে অন্য কোন অসামরিক ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি বিধায় চোরাকারবারীদের সনাক্ত করাও সম্ভব হয়নি ।।
উল্লেখ্য, আটককৃত আসামী (এফডিএমএন) এবং পলাতক আসামীদের (বাংলাদেশী নাগরিক) বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ ঘোষিত ১০,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট বহন ও পাচারের দায়ে নিয়মিত মামলার মাধ্যমে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করার। কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও উদ্ধারকৃত মালিকবিহীন ২,০০,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং বার্মিজ বিয়ারগুলো বর্তমানে ব্যাটালিয়ন সদরের ষ্টোরে জমা রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনী কার্যক্রম গ্রহণ পরবর্তীতে তা উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, চী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মিডিয়া কর্মীদের উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হবে।
– স্বাক্ষরিত – লেঃ কর্ণেল মোঃ মহিউদ্দীন আহমেদ, বিজিবিএমএ অধিনায়ক, টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি)