সুজন তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর তানোর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ(এলএসডি)।গত এক সপ্তাহে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েই চলেছে।এতে গরু পালন কারী কৃষক ও খামারীরা চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।এই ভাইরাস জনিত এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতেলিফলেট বিতরণ ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্য ক্রম পরিচালনা করছে তানোর উপজেলাপ্রাণীসম্পদ বিভাগ।লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে লিফলেট বিতরণ করেন তানোর উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তরের লাইভস্টক ফিল্ড এ্যাসিস্টেন্ট(এল.এফ.এ)মামুনুর রশিদ।লাম্পি স্কিন রোগের বিষয়ে জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলা জানা গেছে,গরুর লাম্পি স্কিন ভাইরাস জনিত রোগ।এখন পর্যন্ত এই রোগের কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি।এই রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরে প্রথমে জ্বর দেখা দেয় এবং খাবারের রুচি কমে যায়।জ্বর বেশি হলে নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়,পা ও গলা ফুলে যায়। আক্রান্ত গরুর বুকের নিচে দুই পায়ের মাঝে পানি জমে।গরুর শরীরের বিভিন্ন স্থানে চামড়ায় গুটি গুটি ক্ষত হয় এবং পচন ধরে।সেই সঙ্গে চামড়া থেকে লোম উঠে যায়।সঠিক সময়ে চিকিৎসা নেয়া শুরু করলে এই রোগে আক্রান্ত পশু সুস্থ হতে প্রায় এক মাস সময় লাগে।বড় গরু লাম্পি স্কিন রোগে তুলনামূলক কম ঝুঁকিতে থাকলেও বাছুর গরু আক্রান্ত হলে দিন দিন দুর্বল হয়ে পড়ে এবং মৃত্যুঝুঁকি বেশি থাকে।তানোর উপজেলা প্রানীসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,গত কয়েক দিনে তানোর উপজেলার ২ টিপৌরসভা ও৭টি ইউনিয়নে প্রায়৭০-৮০টি গরু আক্রান্ত হয়ে তানোর উপজেলার পশু হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।তানোর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড.সুমনমিয়া বলেন,লাম্পি স্কিন ডিজিজ নামের এই রোগটি আফ্রিকার জাম্বিয়ায় দেখা দেয় ১৯২৯ সালে।তবে বাংলাদেশে২০১৯সালে এই রোগ টি প্রথম শনাক্ত হয়।বর্তমানে তানোর উপজেলায় এই লাম্পি রোগের প্রকোপ বেশি।আমার এখানে প্রতিদিন গড়ে৫-৬টি লাম্পি স্কিন ডিজেজ নিয়ে আসা গরুর চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছি ও পরামর্শ দিচ্ছি।তবে ভ্যাক্সি নের স্বল্পতা রয়েছে।এমনকি ফার্মেসিতেও লাম্পি রোগের ভ্যাক্সিন পাওয়া যাচ্ছে না লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুর শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে প্যারাসিটামল ও সর্দি থাকলে হিস্টাসিন জাতীয় ওষুধ খাওয়ানোর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।এছাড়া স্যালাইন খাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়। বসন্তের(পক্স)একটি জাত ভাইরাসের মাধ্যমে এই রোগটি ছড়াচ্ছে।এখন পর্যন্ত এ রোগ সারাতে কার্যকর কোনো ওষুধ কিংবা ভ্যাক্সিন আবিষ্কার হয়নি।তবে গরুর এই রোগ প্রতিরোধে গোট পক্স(ছাগলের বসন্ত)টিকা আপাতত দেওয়া হচ্ছে।কিছু ক্ষেত্রে এই টিকা ভালো কাজ দিচ্ছে।এই রোগ প্রতিরোধে,মতবিনিময় সভা,উঠান বৈঠক করাসহ ইউনিয়ন ভ্যাক্সিনেটর দের মাধ্যমে খামারি ও কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা সুমন মিয়া বলেন,গরুর লাম্পি স্কিন রোগ একটা ভাইরাস জনিত রোগ।মশা,মাছি,ডাঁশজাতীয় রক্ত খায় এমন পতঙ্গের মাধ্যমে এক গরু থেকে আরেক গরুতে এই রোগ ছড়ায়।রোগটা যাতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে এজন্য আমরা খামারি ও কৃষকদের গরুকে পরিষ্কা র-পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাখা ও মশা,মাছি ও ডাঁশের কামড় থেকে রেহায় পেতে মশারি ব্যবহারের জন্য পরাম র্শ দিচ্ছি।এছাড়া গরুতে ল্যাম্পি স্কিন রোগের লক্ষ্মণ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তানোর উপজেলা পশু হাসপা তালে নিয়ে আসতে বলছি। সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে রোগটা শতভাগ সেরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।