মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:
ফেসবুক সূত্রে পরিচয় তরুন তরুণীর। পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান তারা।এরপর প্রেমিক প্রেমিকার দেখা-দেখি। একপর্যায়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক।শারীরিক সম্পর্কে অন্ত:সত্বা হয়ে পড়ে প্রেমিকা।বিষয়টি প্রেমিকা তার প্রেমিককে জানানোর পড় তা নষ্ট করে ফেলার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।
কিন্তু প্রেমিকা তার সন্তান নষ্ট না করার সিদ্ধান্তে অনঢ় থাকেন। এরপর জন্ম নেয় ফুটফুটে একটি ছেলে সন্তান। যার বর্তমান বয়স ৮ মাস।এখন এই সন্তানের পিতৃ পরিচয় চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তরুণী। এমনই ঘটনা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায়।
সূত্র থেকে জানা যায়, ২০২০ সালে ডিসেম্বর মাসে তরুণীর সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় উপজেলার পৌর শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ড গোলাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আবুল কালামের ছেলে আহম্মেদ তানভীরের।পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্কে গড়ালে তাঁরা দুই জনে দেখা করে ঢাকার শেরে বাংলা নগর থানার একটি আবাসিক হোটেলে। সেখানে প্রেমিক আহম্মেদ তানভীর প্রেমিকাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়ায়।
এ সম্পর্ক অনেক জেরে অন্ত:সত্বা হয়ে পড়লে প্রেমিকা তার প্রেমিক তারভীড়কে বিষয়টি অবহিত করে। তানভীড় আবারও ওই হোটেলে ডেকে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে গর্ভের ভ্রুণ হত্যার জন্য চাপ প্রয়োগ করে মারধর করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এরপর ওই অন্তসত্ত্বা তরুণী শেরে বাংলা থানায় ধর্ষণ মামলা করলে মামলায় তানভীর কয়েক মাস কারাবাস করে বর্তমানে জামিনে আছেন।
তরুণী জানান, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে আমার কোল জুড়ে যে সন্তান আসে আদালতের নির্দেশে তার ডিএনএ টেস্ট করলে সেখানেও আহম্মেদ তানভিরের সঙ্গে মিলে যায়। আমি আমার সন্তানের পিতৃ পরিচয় চাই। ভুক্তভোগী তরুণীর মা বলেন, তানভীরের কারণে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে।
বিবাদী পক্ষ থেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আমাদের বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আশা করি আইন আমাদের সুবিচার দেবে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তানভীর আহম্মেদ এক সময় উপজেলা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিল।
একসময় কিশোর গ্যাং তৈরী করে পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় সংঘবদ্ধ অপরাধে জড়িয়ে পড়নে। এর আগে নারীঘটিত বিষয় নিয়ে বাউফল হাইস্কুল সড়কে স্থানীয় কিছু যুবকের সঙ্গে প্রকাশ্য সংঘাতে জড়িয়ে আহত করেন কয়েক জনকে। ওই ঘটনার রেশ ধরে স্থানীয় দুই সাংবাদিকের পথরোধ করে তাদের সাঙ্গে অসদাচরণ করে প্রকাশ্য হুমকি প্রদান করেন।
এ বিষয়ে মো. আহম্মেদ তানভীরের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তানভীরের পিতা মো. আবুল কালাম বলেন, একটা মেয়ে নিয়ে একটু সমস্যা আছে। কোর্টে মামলা চলতেছে, যা সিদ্ধান্ত নেয়ার কোর্ট নেবে। তিনি আরও বলেন, মেয়ের সম্পর্কে তো আপনারা জানেন না।
এই মেয়ের আগেও দুইবার বিয়ে হইছে। সেতো এগুলা ব্যবসা করে, আমার নাবালক ছেলেটাকে ট্রাপ করে এই কাহিনী করতেছে।
এ ঘটনায় গত ২০ মে ২০২১ তারিখ রাজধানীর শেরে বাংলা নগর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়। যার শেরে বাংলা নগর থানা মামলা নম্বর- ২৬। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী/২০০৩) এর ৯(১) ধারায় মামলাটি রুজু করা হয়।