রিপন কান্তি গুণ, বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি ঃ
প্রতিপক্ষের লোকজনের হামলায় আহত নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সুব্রত সাংমার (৪০) শনিবার সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
সুব্রত সাংমা দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বহেরাতলী গ্রামের সুধীর মানখিনের ছেলে।
সুব্রত সাংমার বড় ভাই দুর্গাপুর উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইমন তজু বলেন, ‘হামলায় আহত হয়ে আমার ভাই ৯ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।’
দুগার্পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) শিবিরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এবং ওসি শিবিরুল ইসলাম জানান, শনিবার সকালে সাবেক চেয়ারম্যান সুব্রত সাংমা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। মরদেহ এখনো দুর্গাপুর আসেনি। এ ঘটনায় সুব্রত সাংমার বোন কেয়া তজু বাদী হয়ে গত ৩০ সেপ্টেম্বর রাতেই দুর্গাপুর থানায় মামলা করেছিলেন।
পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মোবাইলের কল রিসিভ না করার জের ধরে গত ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়ালের ভাই বদিউজ্জামান ও তার লোকজন একই ইউনিয়নের বহেরাতলী গ্রামের মৃত হযরত আলীর ছেলে কাজল মিয়াকে স্থানীয় রাশিমনি বাজারে পেয়ে ব্যাপক মারধর করেন। এ সময় তাদের বাধা দিতে এগিয়ে যান সাবেক চেয়ারম্যান সুব্রত সাংমা। বিষয়টি টের দেখে ছুটে আসেন স্থানীয় লোকজনও।
এতে সুব্রত সাংমার প্রতি ক্ষুব্ধ হন প্রতিপক্ষের লোকজন। এরই জের ধরে ঐ দিন রাত ৮টার দিকে দুর্গাপুর পৌর শহরের শিবগঞ্জ বাজারের সুমেশ্বরী নদীর গোদারাঘাটে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সুব্রত সাংমার ওপর হামলা করে তাকে মারাত্মক জখম করে। তাকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
দুর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শিবিরুল ইসলাম জানান, সাবেক এই ইউপি চেয়ারম্যানের মৃত্যুর খবরে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ দেখা দেয়। স্থানীয়রা হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবিতে দুর্গাপুর সদরের উৎরাইল বাজারে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ কারণে শিবগঞ্জ বাজারে দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ওসি আরও জানান, হামলার ঘটনায় আগে একটি মামলা হয়েছিল। এখন সেটিই হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে। সেই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছিল, দুর্গাপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও কুল্লাগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়ালকে। এবং তার দুই ভাই শামীম মিয়া ওরফে শ্যুটার শামীম, বদিউজ্জামানসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ অজ্ঞাত আরও ১৬ জনকে আসামি করা হয়।