আবু রায়হান লিটন,নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর বদলগাছীতে উপ সহকারী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের প্রকাশ্যে মদ্যপানের ঘটনা নিয়ে এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। সম্প্রতি এই সরকারি কর্মকর্তার কান্ড নিয়ে সচেতন মহল আশংকায় রয়েছ। ভিডিওতে দেখা যায় বদলগাছী উপজেলার এলজিইডি উপসহকারী ঐ কর্মকর্তা প্রকাশ্যে রাস্তার উপর মোটরসাইকেলে বসে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ও অবৈধ ফেনসিডিল পান করছেন। সেখানে পূর্ব থেকে ফোনে যোগাযোগ করা মাদক ব্যবসায়ী জনৈক উজ্জল হোসেন রাস্তার এক পাশ থেকে গোপনে ফেনসিডিলের বোতল সাইফুল ইসলামের নিকট হস্তান্তর করেন। সেই ফেনসিডিল তিনি রাস্তার উপর মোটরসাইকেলে বসে প্রকাশ্যে পান করেন। কিছুক্ষণ পরে ওই মাদক ব্যবসায়ী পুনরায় তার সামনে গেলে তিনি পকেট থেকে টাকা বের করে মাদকের মূল্য পরিশোধ করেন।ঐ সময় আরও বেশ কিছু মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে মাদক কিনতে দেখা যায়।
জানা যায়, মাদক ব্যবসায়ী উজ্জল হোসেন উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের মথুরাপুর (খাঁ পাড়া) গ্রামের ইসমাইল হোসেনের ছেলে। সে দীর্ঘদিন যাবত প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে দিনের বেলায় প্রকাশ্যে মাদক কারবার পরিচালনা করে আসছে। উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম অফিস চলাকালীন সময়ে মথুরাপুর খাঁ পাড়া নামক স্থানে রাস্তার উপর প্রকাশ্যে ওই ফেনসিডিল পান করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঐ এলাকার একাধিক ব্যক্তি বলেন, এলজিইডি’র উপ-সহকারী ঐ কর্মকর্তাকে সকাল-বিকাল দু বেলায় দেখা যায় এই এলাকায়। তারা আরো বলেন, প্রতিদিন সে ২ টি করে ফেনসিডিল পান করেন। যার প্রতিটির বর্তমান বাজার মূল্য ২ হাজার ২শত টাকা করে। সেই হিসাব মতে প্রতিদিন ফেনসিডিল বাবদ তার ব্যয় হয় ৪হাজার ৪শ টাকা। মাসে লাগে প্রায় লক্ষাধিক টাকা। সচেতন মহল বলেন, প্রতি মাসে যদি ফেনসিডিল বাবদ তার লক্ষাধিক টাকা খরচ হয় তাহলে এতো টাকা তিনি কোথায় পান এবং তার আয়ের উৎস কি? বিষয়টি জনমনে ব্যাপক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
এলাকাবাসি বলেন, প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এবং উপজেলার বাহির থেকে তরুণ ছেলেরা মোটরসাইকেল যোগে মাদক সেবনের জন্য আসে। আর উজ্জল ছাড়াও অনেকেই প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করে খাঁ পাড়া এই গ্রামে। আগের তুলনায় এখন দিনের বেলায় প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। পুলিশের তেমন কোনও তৎপরতা দেখা যায় না। আমরা নিষেধ বা প্রতিবাদ করলে হুমকী-ধামকীসহ থানা পুলিশের ভয়-ভীতি দেখায়। তাই ভয়ে আমরা কিছু বলার সাহস হারিয়ে ফেলেছি। প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি তাদের ছায়া হিসেবে কাজ করে বলেও এলাকা বাসি জানান।
এবিষয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম বলেন, এটা আমার ভুল হয়েছে। এমন কাজ আর কোনও দিন হবে না। দয়া করে আপনারা নিউজ করবেন না। নিউজ করলে আমার চাকুরী থাকবে না। আমার পেটে লাথি মারবেন না প্লিজ। থানার ভিতরে তার সাথে দেখা হলে নিউজ না করার জন্য তিনি বার বার অনুরোধ করেন।
এ বিষয়ে এলজিইডি’র প্রকৌশলী মুখলেছুর রহমান বলেন, এসব আমাকে বলে কি লাভ? সে মদ খায় কি না খায় তাকে জিজ্ঞেস করেন আমাকে কেন এসব বলেন। আর যদি কোনও প্রমাণ থেকে থাকে তাহলে আমাকে দিন আমি বিভাগীয় ব্যবস্থা নিবো।
বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহা. আতিয়ার রহমান বলেন, এ ব্যাপারে কেউ কোনও অভিযোগ দেয়নি। মাদক নিয়ন্ত্রনে আমরা প্রতিদিনই অভিযান চালাই। মাদক উদ্ধারে আমাদের টহল পুলিশ থাকে সারা উপজেলার বিভিন্ন জায়গায়। ওখানেও আমাদের টিম যাবে। মাদক নিয়ন্ত্রনে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি।