আরিয়ান খান ইভান
মির্জাপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইল মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ি হাজতে লেবু মিয়া নামে এক অভিযুক্ত আসামী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যার ঘটনায় বাঁশতৈল বাজারে গোড়াই-সখিপুর রোডে বিক্ষোভ ও প্রায় ২ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন এলাকাবাসী। তার পিতার নাম বাহার উদ্দিন। গ্রামের বাড়ি বাঁশতৈল গ্রামে।বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ চলাকালে সড়কে প্রায় ১৫ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়।বিক্ষোভে প্রায় ৫ হাজারের অধিক মানুষ অংশগ্রহন করেন।পরে সখিপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার এম এম রাকিব উর রাজা ও মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।এ সময় তারা বলেন, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অতি দ্রুত সঠিক বিচার করা হবে।স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, এটি কোনক্রমেই আত্মহত্যা না,এটি একটি পরিকল্পিত হত্যা।এই হত্যার বিচার চাই।
এদিকে লেবুর পরিবার অভিযোগ করেছে, তাকে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সাখাওয়াত হোসেনসহ পুলিশ সদস্যগন নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে। বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য লাশ আত্নহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নেওয়ার জোর দাবী জানিয়েছেন।
জানা গেছে, গতকাল সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ১৩ নং বাঁশতৈল ইউনিয়নের বাঁশতৈল পশ্চিমপাড়া গ্রামে সখিনা বেগমের নিজ ঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। সখিনা বেগমের সাবেক স্বামীর নাম মফিজ উদ্দিন। ৮-১০ বছর পুর্বে স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হলে বাঁশতৈল পশ্চিমপাড়া গ্রামে বাড়ি নির্মান করে এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে সখিনা বেগম বসবাস করতেন। এক ছেলে মালেশিয়া প্রবাসি। তার দুই মেয়ে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় ছেলের বৌ নিয়ে বাড়িতে থাকতেন। গত দুই তিন দিন পুর্বে ছেলের বৌ তার বাবার বাড়ি যান। এই সুযোগে গতকাল রবিবার রাতে দুষ্কৃতকারীরা তার ঘরে ঢুকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে বাহিরে তালা ঝূঁলিয়ে চলে যায় বলে জানা যায়। সোমবার দুপুর পর্যন্ত সখিনা বেগমের সন্ধান না পেয়ে আশপাশের লোকজনের সন্দেহ হয়। পুলিশকে খবর দিলে বাড়িতে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ সাবেক স্বামী মফিজ উদ্দিন এবং লেবু মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। ভোর পাঁচটার দিকে পুলিশ ফাঁড়ি হাজতে লেবু মিয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগন ঘটনাস্থলে আসছেন।লাশ ও আরেক আসামী থানায় নিয়ে গেছে ফাঁড়ি পুলিশ।
ফাড়ির সামনে দোকানদার আব্দুস সামাদ ও জাকির হোসেন বলেন,সকালে আমাদের ফাঁড়ির ইনচার্জ সাখাওয়াত হোসেন ডেকে নিয়ে তারপর লাশ দেখাইছে।আমরা আর কিছু জানিনা।
লেবু মিয়ার ভাতিজা সাদ্দাম হোসেন অভিযোগ করে বলেন,আত্নহত্যা করার জন্য ফাঁড়ির হাজতে দড়ি পেল কোথায়? ফাঁড়িতে রাতে পুলিশ ডিউটি থাকা অবস্থায় কিভাবে আত্নহত্যা করল? আমার চাচা হত্যার বিচার চাই। আমার চাচা আত্নহত্যা করে নাই।তাকে হত্যা করা হয়েছে।
মৃত লেবু মিয়ার স্ত্রী আলিয়া বেগম জানান,আমার স্বামীকে পুলিশ হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই।আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই।
বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. সাখাওয়াত হোসেনের সাথে ফোনে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করে নাই।
এমন ঘটনায় উক্ত এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এবং চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।