রিপন কান্তি গুণ, বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোনার বারহাট্টায় বাকীতে আসবার পত্র (খাট) দিতে অস্বীকার করাকে কেন্দ্র করে হামলা ও মারধোরের ঘটনায় ১১ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ১৭ জনকে আসামী করে বারহাট্টা থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এ হামলায় আহতদের মধ্যে আল আমীন(৪৬), সোহাগ মিয়া (২২), সাইদুল ইসলাম (৪৮), নুকুল চন্দ্র দাস (২৫) ও অন্তর মিয়া বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন আগে উপজেলার নৈহাটী গ্রামের আমান আলীর ছেলে নাজিম উদ্দিন (৫২) নৈহাটী বাজারে আসবাবপত্র ব্যবসায়ী সুজন চন্দ্র দাসের কাঠের দোকানে ১৬ হাজার টাকা মূল্যের একটি কাঠের খাট বানানোর অর্ডার দেন। অর্ডার দেওয়ার সময় নাজিম উদ্দিন ১১ হাজার টাকা নগদে পরিশোধ করেন এবং অবশিষ্ট ৫ হাজার টাকা খাট বানানো শেষ করার পর সরবরাহ নেওয়ার সময় পরিশোধ করবেন বলে ব্যবসায়ীকে আশ্বস্ত করেন।
তৈরিকৃত খাট নিতে নাজিম উদ্দিন বুধবার সকালে দোকানে আসেন এবং বাকী টাকা পরিশোধ না করেই খাট নিয়ে যেতে চান। এ সময়,দোকান মালিক সুজন চন্দ্র দাস দোকানে ছিলেন না। কর্মাচারী নুকুল চন্দ্র দাস মালিক ছাড়া বাকীতে খাট দিতে অস্বীকৃতি জানালে, ক্ষুব্দ হয়ে নাজিম উদিন ও তার লোকজন নুকুল চন্দ্র দাসকে মারধর করে এবং তার দুই হাত বেঁধে বাজারের রাস্তা দিয়ে হাঁটায়।
বিষয়টি মীমাংসার জন্য বুধবার বিকেলে ব্যবসায়ীদের উদ্যোগে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশের আয়োজন করা হয়। সালিশ চলাকালে নাজিম উদ্দিনের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে সকলেই ভয়ে দৌড়ে চলে যায়। এ সময় হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। ফলে উভয়পক্ষের কমপক্ষে এগার ব্যক্তি আহত হয়। পরে তাদের উদ্ধার বারহাট্টা উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সে ভর্তি করা হয়।
সুজন চন্দ্র দাসের অভিযোগে জানা যায়, বুধবার সকালের ঘটনাকে মিমাংসা করার জন্য বুধবার বিকালবেলা এলাকার সাবেক চেয়ারম্যান মো. আমিরুল ইসলাম খানের ভাই আল আমীন খানসহ নৈহাটী গ্রাম ও বাজারের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ শালিসে বসেন। কিন্তু শালিস চলাকালে মানিক মিয়া, ছোটন মিয়া, দীপক দাস, নাজিম উদ্দিন, বিশ্বসহ কয়েকজন আল আমীন খানের উপর হামলা চালায়। এ সময় অনেকেই আহত হয়।
বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ লুৎফুল হক জানান, নৈহাটী বাজারের ঘটনায় সুজন চন্দ্র দাস বাদী হয়ে, শুক্রবার মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারে সর্বাত্নক চেষ্ঠা চলছে। এলাকায় নজরদারী বাড়ানো হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মাজহারুল ইসলাম ও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ লুৎফুল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
অভিযুক্তরা পলাতক থাকার কারণে কারো সাথে কথা বলা সম্ভব হয় নাই।