রিপন কান্তি গুণ,বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি;
নেত্রকোনার বারহাট্টায় তীব্র যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছে জনসাধারণ। উপজেলার পশ্চিম গোপালপুর থেকে শুরু করে, থানার মোড় পর্যন্ত যানজট এখন নিত্যদিনের ঘটনা। বারহাট্টার জনসাধারণ এ দুর্ভোগের দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ চান।
বাজার কেন্দ্রীক বারহাট্টার মূল এই রাস্তা দিয়ে উপজেলার সাত ইউনিয়নের মানুষ যাতায়াত করেন। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী উপজেলা মোহনগঞ্জ, আটপাড়া ও খালিয়াজুড়ির মানুষ বাসে নেত্রকোনা জেলা সদরসহ রাজধানী ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকেন। রাস্তায় অটোরিকশার সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, শহরের প্রধান রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল এবং যত্রতত্র ট্রাক পার্কিং করে মালামাল উঠা-নামা করার কারণে এই যানজট হচ্ছে বলে, অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
বাজারের অধিকাংশ জায়গায় ধান ব্যবসায়ীসহ বড় আড়তদারেরা রাস্তা উপর ট্রাক থামিয়ে মালামাল লোড-আনলোড করার ক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসনের কোনো নিয়ম মানেন না। এতে দীর্ঘ হয় যানবাহনের সারি। ফলস্বরূপ সৃষ্টি হয় যানজট। ফলে প্রতিনিয়তই ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী জনগণ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
আজকের দীর্ঘ যানজটে আটকে থাকা ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী বিআরটিসি বাসের যাত্রী সোহেল রানার মত ভুক্তভোগী আরও অনেক যাত্রী বলেন, আমরা নেত্রকোনা থেকে বারহাট্টা খুব অল্প সময়েই চলে এসেছি। কিন্তু বারহাট্টা পশ্চিম বাজারে এসে প্রায় আধঘন্টা, স্টেশন রোডে আধঘন্টাও বেশি, সর্বশেষ থানার মোড়ে প্রায় এক ঘন্টা সময় ধরে যানজটে আটকে আছি। যতক্ষণ ধরে আমরা বারহাট্টা পশ্চিম বাজার থেকে থানার মোড় পর্যন্ত এসেছি ততক্ষণে মোহনগঞ্জ পৌঁছে নিজ নিজ বাড়ি পৌঁছে যেতাম। কর্তৃপক্ষ যদি এখনই সচেতন না হয় তবে ভবিষ্যতে যানজট আরও বাড়বে।
বারহাট্টা সিকেপি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাকিব বলে, ‘আমার বাসা গোপালপুর পশ্চিম বাজারে, বাসা থেকে অটোরিকশা করে স্কুলে যেতে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট সময় লাগার কথা। অথচ তিন জায়গার যানজটের কারণে স্কুলে পৌঁছাতে ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় লেগে যায়। ‘আমাদের এই ভোগান্তি থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য প্রশাসকে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানাই।’
বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফুল হক বলেন, বারহাট্টা বাজার সড়কের দু’পাশের রড সিমেন্ট ও ধানের দোকান গুলোর সামনে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮ পর্যন্ত ছোট বড় গাড়ী লোড-আনলোড থেকে বিরত থাকার কথা বলা থাকলেও তা তোয়াক্কা না করে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস.এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ব্যবসায়ীদের সাথে মিটিং করে রাত ৮টা থেকে সকাল ১০টার মধ্যে ট্রাক লোড-আনলোড করার জন্য সিদ্ধান্ত দিয়েছি। আবার অনেকবার ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করেও সমস্যার সমাধান কচেষ্টা করেছি। ব্যবসায়ীরা যদি নিজেদের সদিচ্ছা না দেখায় তবে, জরিমানা করে যানজট কমানো সম্ভব নয়।