শরীয়পুর থেকে আক্তার হোসেনঃ
শরীয়তপুর জেলার সকল মানুষের প্রিয় ব্যক্তি, শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব মনদীপ ঘরাই। যিনি চাকরি করতেন শরীয়তপুর সদর উপজেলায়,কিন্তু তকে ভালোবাসতেন শরীয়তপুরের সকল উপজেলার মানুষ। সেই প্রিয় ব্যক্তির লেখা কবিতা,( এমন বৃষ্টি কে না চায়)।
আজকের এই অবিরত বৃষ্টিকে দোষ দেই না কোনো।
কারো কাছে জিজ্ঞেস করে ঝরতে হবে;
এমন তো কোথাও লেখা নেই।
তাই গলে যাওয়া মুক্তোর দানার মতো;
মেঘ ভেঙ্গে ঝরছে জল।
ভিজিয়ে দিয়ে যাচ্ছে দালান-কোটা, রাস্তা-জলাশয়
কিংবা মন।
এর মাঝেই খালি মাথায়, খালি পকেটে
গায়ে গামছা জড়িয়ে বাড়ি ফিরছে ;
নিউ ভোজন বিলাস রেস্টুরেন্টের মেসিয়ার।
সিগন্যালে ফুল বেচা মেয়েটি ফুলের বদলে বেচে দিয়েছে রাতের ঘুম।
তিন মাস বয়সী বাচ্চা কোলে বিষন্ন যুবতী নীরবে গুনছে:
পলিথিনের ছাদ বেয়ে নেমে আসা জলের ফোঁটা।
পাশের ঝুপড়ির বুড়ি মুখ খারাপ করছে ভেজা কাঠে চুলো জ্বলছে না তাই।
নিজের ভেজা গা চেটেপুটে শুকানোর চেষ্টা করছে গলির কালো সাদা কুকুরটা।
অফিস ফেরত ফিটফাট ভদ্রলোকও ভিজে গেছেন কুকুরটার মতো;
ছাতা না আনার আক্ষেপ মেটাতে এক লাথি দিয়েছেন কুকুরটার গায়!
ওভারব্রিজের শেডের তলে কোনো এক দেহ পসারিনী সাজগোজ করে-
হাতের কড়ায় জমিয়ে রাখছে ‘ব্যর্থ’ রাতের সংখ্যা।
ওই ব্রিজেরই ঠিক নিজে কালো শার্ট পরা এক তরুন মোবাইল ভিজতে দেবে না বলে নিজের পুরোটুকু দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে।পারছে না।
আচ্ছা, আগের দিনে যেমন করে বুক পকেটে রাখা চিঠি বৃষ্টিতে ভিজে কালি লেপ্টে যেতো, মোবাইলের টেক্সট ম্যাসেজ বা ম্যাসেঞ্জারের চ্যাটবক্সও কি বৃষ্টিতে ভেজে?
ভেজে হয়তো। তা না হলে ছেলেটা এত মরিয়া কেনো!
ফাঁকা রাস্তায় কাঁধের দায়িত্ব কিংবা অবসাদ নিয়ে অফিস ফেরত কোনো তরুণী রিক্সাওয়ালার দেয়া পলিথিনটা জড়িয়ে
-শুকনো থেকেও মনে মনে ভিজে যাচ্ছে জলে।
স্যান্ডেলের কাদা আর গায়ের ভেজা জামাটা মেনে নিতে পারছে না -রাস্তার ওপারের খিটখিটে বুড়োটা।
পাশেই ভেজা সিগারেটের প্যাকেটগুলো মুছতে মুছতে লোকসান গুনছে ফেরিওয়ালা।
ওরা কেউ বৃষ্টি চায় না। অন্ততঃ আজ না।
আর আমি?
অন্ধকারে বারান্দাতে বসে চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে আয়েশে ভাবছি;
এমন বৃষ্টি কে না চায়!
#মনদীপ_ঘরাই