মণিরামপুর প্রতিনিধি:
মণিরামপুরে রাস্তা নির্মাণে অবৈধভাবে হরিহর নদী থেতে বালু উত্তোলন। দুই কোটি ১১ লাখ টাকা বরাদ্দের আড়াই কিলোমিটারের দৈর্ঘ্যরে বেশি রাস্তা নির্মাণে ব্যবহৃত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে সদর ইউনিয়নের দেবিদাসপুর এলাকার হরিহর নদী থেকে। রাস্তা নির্মাণে ব্যবহৃত বালুর অর্থ বরাদ্দ থাকলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে রাতদিন এ বালু উত্তোলন করেই চলেছেন।উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে জানাগেছে, ২০২১-২২ অর্থ বছরে মনিরামপুর সদর ইউনিয়নের হাকোবা ঈদগাহ মোড় ভায়া দেবিদাসপুর-পাতন মোড় হয়ে সোনাডাঙ্গা পারিবার কল্যাণ কেন্দ্র অভিমুখে ২ হাজার ৬১০ মিটার (আড়াই কিলোমিটারের) দৈর্ঘ্যরে পাকারাস্তা (পিচ) নির্মাণে সরকার বরাদ্দ করেন ২ কোটি ১১ লাখ টাকা। সে মোতাবেক এলজিইডি থেকে টেন্ডার আহবান করা হয়। টেন্ডারে কাজটি পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স বিশ্বজিত কনষ্ট্রাকশন। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অংশিদার বিশ্বজিত দাস জানান, নানা প্রতিকুলতার কারণে কাজটি শুরু করতে একটু বিলম্ব হয়েছে। ইতিমধ্যে রাস্তার বক্স খোড়া শুরু হয়েছে। বক্স খুড়ে ব্যবহৃত বালুর অর্থ যথাযথ বরাদ্দ থাকলেও অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বালু ক্রয় না করে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তি হরিহর নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে রাতদিন উত্তোলন করছেন। এ বালু উত্তোলনের কাজটি বাস্তবায়ন করছেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বালু উত্তোলন সিন্ডিকেডের হোতা ইদ্রিস আলী ও তার লোকজন।
শনিবার সকাল ৯টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখাযায়, দেবিদাসপুর গ্রামের শুকুর আলী, নিজাম ও ওসমান গণির বাড়ির পাশে হরিহর নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে লম্বা পাইপের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে স্লুইসগেটের পাশে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। সেখান থেকে ট্রলিতে করে রাস্তায় দেওয়া হচ্ছে। এ সময় কথা হয় ড্রেজারের শ্রমিকদের সাথে। তারা জানান, ড্রেজার মেশিনের মালিক ইদ্রিস আলীর সাথে তারা তিনজন শ্রমিক এসেছেন একমাসের চুক্তিতে। এক মাসের মধ্যে আড়াই কিলোমিটার রাস্তার বালু তারা নদী থেকে উত্তোলন করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে এ সময় ড্রেজারের মালিক ইদ্রিস আলীকে পাওয়া যায়নি। কথা হয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স বিশ্বজিত কনষ্ট্রাকশনের অংশিদার (পার্টনার) বিশ্বজিত দাসের সাথে। তিনি জানান, নির্মাণ সামগ্রির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারনে কাজ হচ্ছে একটু ধীরগতিতে। অপর অংশিদার সিদ্দিকুর রহমান জানান, এলাকাবাসীর মতামতের ভিত্তিতে নদী থেকে সামান্য বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। তবে উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুত কুমার জানান, রাস্তা নির্মাণে বালুর জন্য নির্দ্দিষ্ট হারে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া আছে। নদী থেকে বালু উত্তোলন করার কথা নয়। এ ব্যাপারে সহকারি কমিশনার (ভূমি) আলী হাসান জানান, খবর পেয়ে ইতিমধ্যে নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার বেশ কয়েকজন ব্যক্তি জানান, প্রশাসন থেকে বন্ধ করে দেওয়ার পর সন্ধ্যা থেকে আবারও বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।