আবুল হাশেম,রাজশাহী বিভাগীয় প্রধানঃ
রাজশাহী মহানগরীর একমাত্র নারী সংবাদপত্র বিক্রেতা দিল আফরোজ খুকি ওরফে খুকুমনি ইন্তেকাল করেছেন।
বুধবার (১২ এপ্রিল) দিনগত রাত দেড়টার দিকে নগরীর মিশনারিজ অব চ্যারিটি আশাদান মাদার তেরেজা আশ্রমে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ওই আশ্রমের সিস্টার জুয়ানে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন রাজশাহীর সেই পেপার বিক্রেতা খুকি, আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন যেন উনাকে জান্নাতুল ফিরদাউস দান করেন আমিন।
(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।
এ বিষয়ে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, খুকুমনি মারা গেছেন। ঘটনা শোনার পর আমি সেখানে পরিদর্শনে যাই। খুকুমনির পরিবার যদি তার মরদেহ নিতে চায় তবে দেওয়া হবে। আর যদি তারা কোনো দায়িত্বভার না নিতে চায় তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধর্মীয় রীতি মেনে দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় খবরের কাগজ বিক্রি করার সময় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন খুকুমনি। রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের নগর স্পেশাল ব্রাঞ্চের কনস্টেবল শফিকুর আলম তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে খুকি দুইদিন ধরে কোনো শয্যা পাননি। হাসপাতালের বারান্দায় তার চিকিৎসা চলছিল।
এরপর ১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় রাজশাহী সিটি মেয়রের স্ত্রী শাহীন আকতার রেণী তার সঙ্গে দেখা করতে যান। তিনি খুকির চিকিৎসার খোঁজখবর নেন এবং শয্যার ব্যবস্থা করে দেন। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ২২ ডিসেম্বর তাকে রামেক হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউতে) পাঠানো হয়।
সেখান থেকে ৭ জানুয়ারি সাধারণ ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি রামেক হাসপাতাল থেকে মিশনারিজ অব চ্যারিটি আশাদান মাদার তেরেজা আশ্রমে পাঠানো হয় খুকুমনিকে।
২০২০ সালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খুকুমনির জীবন-সংগ্রামের একটি ভিডিও প্রকাশ পায়। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে আসে। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা প্রশাসন খুকুমনির পাশে দাঁড়ায়। ২০২০ সালে শ্রেষ্ঠ জয়িতার পুরস্কার পান তিনি।