সোহেল রানা,কুড়িগ্রামঃ
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাব পড়েছে দেশের বিভিন্ন জেলায়।তারই প্রভাব পড়েছে কুড়িগ্রামের রাজারহাটে গত ২ দিনের টানা বৃষ্টি আর দমকা হাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে রোপা আমনসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি খেতের। শতশত কৃষকের স্বপ্নের আমন খেতের ফসল বর্তমানে কাদাপানিতে লেপ্টে আছে।
চলতি রোপা আমন চাষের শুরু থেকে প্রকৃতির সাথে অবিরাম লড়াই চলছে রাজারহাটের কৃষকদের। আমনের চারা রোপনের পরে খরার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই অনেক ক্ষেতে দেখা দেয় পোকার আক্রমণ। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ব্যাপক তৎপরতা আর কৃষকদের হার না মানা লড়াইয়ে জয় কৃষকের। রাজারহাটের দিগন্তজুরে খেলা করে সবুজের ঢেউ। কৃষাণ-কৃষাণীরা আশায় বুক বাঁধেন। স্বপ্ন দেখেন ফসল ঘরে তুলে নবান্ন উৎসবে মেতে ওঠার। তবে তাদের আশার পাতে ছাঁই। তাদের স্বপ্নের আমন খেতের ধান গাছ এখন মাটির সাথে লেপ্টে আছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে শত শত কৃষকের পাকা, আধাপাকা,কাঁচা ধান মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। বৃৃষ্টি আর বাতাসের তোড়ে নষ্ট হয়ে গেছে ফুলকপি,বাঁধাকপি,বেগুন,লাউ ক্ষেত সহ বিভিন্ন প্রকার সবজি ক্ষেত। ছিনাই ইউনিয়নের মিরেরবাড়ি গ্রামের কৃষক রাশেদুল ইসলাম বলেন,তার সাড়ে তিন বিঘা জমির ক্ষেতের সদ্য শীষ বের হওয়া স্বর্ণ জাতের ধানের গাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে। বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ডাংরারহাট গ্রামের কৃষক খলিল সরকার জানান,তার নিজের তিন বিঘাসহ তার ভাই ও চাচির পাঁচ বিঘা জমির ধান গাছ এলোমেলো ভাবে জমির কাদাপানিতে লেপ্টে আছে। এতে জমির ধান পঁচে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন তিনি। উমরমজিদ ইউনিয়নের বালাকান্দি গ্রামের এনামুল হক জানান,তিনি এবারে পাঁচ বিঘা জমিতে আমন চারা রোপন করেছেন। তার মধ্য প্রায় আড়াই বিঘা জমির ধান গাছ মাটিতে পড়ে গেছে। এতে ফলন হানির পাশাপাশি গো-খাদ্যে সংকটের সম্ভাবনার কথাও বলেন তিনি। একই পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের প্রান্তিক কৃষক।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সম্পা আকতার বলেন,বৃষ্টি ও বাতাসের তোড়ে যেসকল খেতের ধান গাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে সেসব ধান খেতের পানি দ্রুত নিস্কাসনের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি জমিতে লুটিয়ে পড়া ধান গাছগুলিকে মুটো করে বেঁধে দেয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ফলনহানির কোন সম্ভাবনা আপাতত নাই।