আশিকুর রহমান, স্টাফ রিপোর্টার :-
নরসিংদীর শিবপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গণি মিয়ার পরিবারের ওপর হামলা করে ঘর-বাড়ি ভাংচুর সহ তিনজনকে কুপিয়ে আহত করেছেন উকিল পরিবার।
ঘটনাটি ঘটে শনিবার (৫ জুলাই) শিবপুর উপজেলার বাঘাব ইউনিয়নের খড়কমারা গ্রামে। আহরা হলেন, বাঘাব ইউনিয়নের খড়কমারা গ্রামের আঃ গণি মিয়ার ছেলে আব্দুল্লাহ (৪৩), আঃ গণি মিয়ার স্ত্রী নুরনাহার (৬৫) ও আব্দুল্লাহর স্ত্রী শাহিদা বেগম (৩৬)। উভয়ই শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জুলাই মাসের ২৪ তারিখে আব্দুল্লাহ তার পৈতৃক ভিটায় বাড়ি নির্মাণ করার জন্য আপন চাচতো ভাইয়ের সাথে জমি বিনিময় নিয়ে কথা বলছিলেন।
এমন সময় প্রতিবেশী সুনুমদ্দিনের ছেলে সিরাজুল এসে হাজির হোন। এসময় আব্দুল্লাহ বলেন, কথা বলছি আমরা। তুই নাক গলানোর কে? এর মধ্যেই দুজনের কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে আব্দুল্লাহ সিরাজুলকে গালে থাপ্পড় মারেন। পরে আব্দুল্লাহর বাবা বিষয়টি শুনার পর, তার মেজ ছেলে আতিকুল্লাহকে সাথে নিয়ে সিরাজুলের বড় ভাই এডভোকেট সাইফুল ইসলাম এর কাছে গিয়ে তার ছেলের হয়ে দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চান। এসময় সাইফুল ইসলাম বিষয়টি মীমাংসা না করে হুংকার দিয়ে বলেন বেড়ান মাইরের বদলে মাইর হবে, ক্ষমা নয়। বলেই উকিল বাড়ির লোকজন গণি মিয়ার বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় তারা বাড়ির আসবাবপত্র ভাংচুর করে আব্দুল্লাহকে না পেয়ে তার বৃদ্ধা মা ও স্ত্রী সাহিদা বেগমকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে, উকিল সাইফুল ইসলাম ও তার বাড়ির লোকজন লাঠি শোটা নিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেট দিয়ে রাখেন। অবস্থা বেগতিক দেখে স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করে পুলিশের সহযোগিতায় আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। এব্যাপারে আব্দুল্লাহর পরিবার চেয়রাম্যানের নিকট বিচার বিচার চাইলে, উকিল সাইফুল ইসলাম এর ফুফাতো ভাই আনজত আলীকে দিয়ে মীমাংসার জন্য সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার (৫ আগষ্ট) বিকেলে আব্দুল্লাহ ও তার স্ত্রী সাহিদা নিজ বাড়ির সামনে কাজ করার সময় সিরাজুল ও তার দুই ভাই তাইজুল ও মমতাজউদ্দিন দেশীয় অস্ত্র লাঠিসোঠা নিয়ে হামলা চালায়। তারা আব্দুল্লাহ ও তার স্ত্রী সাহিদাকে পিটিয়ে গুরতর রক্তাক্ত জখম করেন। পরে আশেপাশের লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য।
আহত আব্দুল্লাহ বলেন, তারা আমাকে জানে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো, আমার মাথায় সাতটি সেলাই লেগেছে, আমার স্ত্রী সাহিদাকে পিটিয়ে হাড় মাংস এক করে ফেলেছে। সে এখন বিছানা থেকে উঠতে পারে না। আমি চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ এবং থানায় মামলা দায়ের করেছি। আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই। আব্দুল্লাহর ভাই আতিকুল্লাহ বলেন, উকিলের দাপটে তার ভাইদের অত্যাচারে সারা এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। উকিল পরিবারের দাপট ও অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি এবং আমরা গোটা পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এ ব্যাপারে জানতে এডভোকেট সাইফুল ইসলাম এর মোবাইলে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বাঘাব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদ হোসেন বলেন, খরকমারা গ্রামের আব্দুল্লাহ ও তার পরিবারের উপর হামলার বিষয়টি সত্যিই ন্যাক্কারজনক। ভুক্তভোগী পরিবার আমার কাছে অভিযোগ করার পর, উকিলের ফুফাতো ভাই আনজত আলী দায়িত্ব নিয়েছিলো মিমাংসা করে দিবে বলে। মিমাংসার কথা বলে পুনরায় হামলা অত্যান্ত দুঃখজনক। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরা গ্রাম ফুঁসে ওঠেছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দাঙ্গা বেধে যেতে পারে। গ্রামকে শান্ত রাখার জন্য আমি পুনরায় অভিযোগ পেয়ে সাথে সাথে আগামী বুধবার আমার অফিসে হাজির হতে দু পক্ষকেই নোটিশ প্রদান করেছি। আমার ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখতে আমি সর্বদা প্রস্তুত থাকি। কারন আমি নির্বাচনের আগে জনগণকে বলেছি, আমি নির্বাচিত হলে তারা ঘুমাবে, আমি পাহারা দিবো।