সোহেল রানা,কুড়িগ্রামঃ
এক সময় দিগন্তজুড়ে মাঠ কিংবা সড়কের দুই পাশে সারি সারি অসংখ্য খেজুর গাছ চোখে পড়ত। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য এ খেজুর গাছ। শীত ঋতুতে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য হেমন্তে চলছে প্রস্তুতি। শীতের সকালে মিষ্টি রোদে বসে সুস্বাদু খেজুরের রস খাওয়ার মজাই আলাদা। শীতের ভরা মৌসুমে রস সংগ্রহের জন্য শীতের আগমনের শুরু থেকেই খেজুর রস সংগ্রহের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে গাছিরা। এখন তেমন একটা শীতের দেখা না মিললেও এরই মধ্যে খেজুর রস সংগ্রহের জন্য কাজ শুরু করে দিয়েছেন অনেকেই। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য খেজুরের রস ও সুঘ্রাই নলেন গুড়, পাটালির। কয়েক বছর আগেও গ্রামবাংলার প্রতিটি বাড়িতে, ক্ষেতের আইলে ও রাস্তার দুই ধার দিয়ে ছিল অসংখ্য খেজুর গাছ। এখন আর তেমনটি নেই। যা আছে সেগুলো থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। খেজুর গাছ সারা বছর অযত্নে অবহেলায় থাকলেও শীত মৌসুম এলেই তার কদর বেড়ে যায়। বছরের চার মাস খেজুর গাছ থেকে মিষ্টি রস সংগ্রহ করা হয়। খেজুর রস অত্যন্ত সুস্বাধু হওয়ায় সবার কাছে অতি জনপ্রিয়। শীত মৌসুমে শহর থেকে দলে দলে মানুষ খেজুর রস খেতে ছুটে আসত গ্রাম বাংলায়। ভোর বেলা গাছ থেকে রস পাড়ার সময় গ্রামীণ পরিবেশটা খেজুর রসে মধুর হয়ে উঠত। রস সংগ্রহকারী গাছিদের প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যেত সে সময়ে। রস জ্বালিয়ে সুঘ্রাণ নলেন গুড় ও পাটালি তৈরি করতেন তারা। যার সাধ ও ঘ্রাণ ছিল অপূর্ব। নতুন প্রজন্মের কাছে রূপকথা মনে হলেও বাস্তব। যত বেশি শীত পড়ে তত বেশি মিষ্টি রস সংগ্রহ হয় খেজুর গাছ থেকে। শীতের পুরো মৌসুমে চলে রস,গুড়,পিঠা,পুলি ও পায়েস খাওয়ার উৎসব। বাংলার ঐতিহ্যবাহী পরিবেশ বান্ধব খেজুর গাছ এখন বিলুপ্তির পথে। খেজুর গাছ ফসলের কোনো ক্ষতি করে না। এই গাছের জন্য বাড়তি কোনো খরচ করতে হয় না,যা আমাদের রস ও গুড়ের চাহিদা মিটায়। সব মিলিয়ে এখন চলছে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের প্রস্তুতি।