রিপন কান্তি গুণ, বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধিঃ
নেত্রকোনার খালিয়াজুরি উপজেলার আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে, দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের কারণে, পূর্ব নির্ধারিত বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন, আগামীকাল (২১ অক্টোবর) শুক্রবার হওয়ার কথা চিল পরে তা স্থগিত করা হয়। আজ, জেলা এবং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের আলোচনায় আগামী ২৪ অক্টোবর সোমবার বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সন্মেলনের তারিখ পূনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
গতকাল বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন স্থগিত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীসহ প্রার্থীদের মধ্যে চরম দুঃশ্চিন্তা দেখা দিয়েছিল।
সকল বাধা- বিঘ্নের অবসান ঘটিয়ে, স্থগিত হওয়া আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে খ্যাত বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন আগামী ২৪ অক্টোবর অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে।
সকল দুঃশ্চিতার রেশ কাটিয়ে, আজ নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তে আগামী ২৪ অক্টোবর সন্মেলনের তারিখ পূনঃনির্ধারণ হওয়ায়, নেতাকর্মীদের মধ্যে পূনরায় কর্ম চাঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে। দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা।
আজ থেকে আবার উপজেলা জুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু একটাই, আগামী ২৪ অক্টোবর নেত্রকোনা জেলাধীন বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে নেতৃত্ব নির্বাচনে কী বার্তা দেবে আওয়ামী লীগ। কে হবেন সভাপতি? আবার কে হবেন সাধারণ সম্পাদক। সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীরা নতুন উদ্যমে আবার ব্যস্ততম সময় পার করছেন।
সাবেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, ও নেত্রকোনা জেলা আওয়ামীলীগের বিপ্লবী সদস্য, আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা এবং সাবেক সফল বারহাট্টা উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল কবির খোকন বলেন, নির্বাচনের দিন পূনরায় ধার্য হওয়ায় আমি আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত । আমি বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে, বারহাট্টা উপজেলার জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ছিলাম। বারহাট্টা উপজেলার জনগণ আমার কাজের মূল্যায়ন করে চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত করেছিলেন। উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে, এলাকার সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি এবং এখন পর্যন্ত করে যাচ্ছি। এখনো সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখে তাদের পাশে আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব। উপজেলার ধনী-গরীর এবং এলাকার সাধারণ মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে আমার সু-সম্পর্ক রয়েছে। সব জায়গা এবং সব মহলের লোকজন থেকে ভাল সাড়া পাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, দলীয় নেতৃবৃন্দ ও হাই কমান্ড সার্বিক বিষয়টি বিবেচনা করে দেশ ও এলাকার মানুষের কল্যাণে কাজ করার সুবিধার্থে আমাকে, সভাপতি পদে মনোনীত করবেন বলে, আমি শতভাগ আশাবাদী। আমরা সকল নেতাকর্মী আজ ঐক্যের সারিতে। সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব ভুলে বারহাট্টার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সফল করব।
বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক দীপক কুমার সাহা সেন্টু বলেন, ১৯৭৩ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতি দিয়ে আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু। এরপর থেকে যুবলীগ, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে যাচ্ছি। রাজনীতি করতে গিয়ে কারাভোগ পর্যন্ত করতে হয়েছে। জেল, জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েছি বহুবার। দলীয় কর্মী হয়ে, সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করছি। আমি আশাবাদী দলের নেতাকর্মী ও হাইকমান্ড বিষয়টি বিবেচনা করবে।
বারহাট্টা সিকেপি সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ (শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম) সম্মেলনের প্রস্তুতি কমিটির উদ্দ্যোগে মঞ্চ তৈরির কাজ সমাপ্তির পথে।
উপজেলা শহর ঘুরে দেখা গেছে, শহরের প্রতিটি রাস্তায় তৈরি হয়েছে, বিভিন্ন প্রার্থীদের বিশাল বিশাল তোরণ। শহরের বিভিন্ন সড়ক সহ প্রতিটি অলিতে-গলিতে নানা রঙ্গের ফেস্টুন, ব্যানার, পোস্টারে ভরে গেছে।
কে বা কারা হচ্ছেন আওয়ামী লীগের নতুন কান্ডারি এ নিয়ে চলছে, চা স্টলসহ বিভিন্ন দোকানে দোকানে আলোচনার ঝড়। তাছাড়াও প্রার্থীরা তাদের স্বপক্ষে সমর্থনের আশায় দিন-রাত উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে সভা সমাবেশ করে চলেছেন।
বারহাট্টা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে স্থানীয় জ্যেষ্ঠ নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
বারহাট্টা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফুল হক জানান, সম্মেলনকে ঘিরে উপজেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। সেই সঙ্গে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন।