মোঃ মেহেদী হাসান
মানব ইতিহাসের প্রাচীনতম দুরারোগ্য মরণব্যাধিগুলোর মধ্যে হিমোফিলিয়া একটি বংশাণুক্রমিক রক্তক্ষরণজনিত রোগ।
রক্তে জমাট বাঁধার উপাদান বা ফ্যাক্টর জন্মগতভাবে কম থাকার কারণে হিমোফিলিয়া রোগটি হয়ে থাকে। এ রোগটি সাধারণত পুরুষের হয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রক্তে ফ্যাক্টর-৮-এর ঘাটতির কারণে হিমোফিলিয়া-এ এবং ফ্যাক্টর-৯ এর অভাবে হিমোফেলিয়া-বি আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
শরীরে কোথাও কেটে গেলে রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়া এ হিমোফিলিয়া রোগের প্রধান লক্ষণ।
হিমোফিলিয়া রোগ হলে রোগী জম্মের পর নাভি কাটার সময় রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না,ছয় মাস বয়সে হামাগুড়ি দেওয়ার সময় হাতের কনই পায়ের গিড়ায় বা শরীরে কালচে দাগ দেখা যায় সাথে ব্যাথা হয় ,জয়েন্ট গুলো ফুলে যায়, নাক বা দাঁত দিয়ে রক্ত বের হওয়া, প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া ,পেটে রক্তক্ষরণ ,মাথায় রক্তক্ষরণ,ইত্যাদি এ রোগের প্রধান উপসর্গ ।
রক্তক্ষরণ বন্ধ না হলে রোগী মারা যেতে পারে।
সাধারণত দুই ধরনের হিমোফিলিয়া রোগী দেখা যায়, হিমোফেলিয়া-এ এবং হিমোফেলিয়া-বি।
চিকিৎসকদের মতে, ৮৫ শতাংশ রোগীর হিমোফেলিয়া-এ এবং ১৫ শতাংশ রোগীর হিমোফেলিয়া-বি হয়ে থাকে।
হিমোফেলিয়ার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, আমেরিকায় প্রতি ১০ হাজার মানুষের মধ্যে গড়ে ১ জন হিমোফেলিয়া আক্রান্ত।
বাংলাদেশে এ রোগের কোনো গবেষণা ও সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও চিকিৎসকদের ধারণা, দেশে প্রায় ১৬ হাজারের বেশি মানুষ এ রোগে আক্রান্ত।
বিশ্বব্যাপী প্রায় চার লাখ মানুষ হিমোফিলিয়া আক্রান্ত।
হিমোফেলিয়া রোগ অনিরাময়যোগ্য একটি রোগ। তবে আক্রান্তের প্রথম দায়িত্বই হচ্ছে সচেতনতার সাথে চলাফেরা করা।হিমোফিলিয়া রোগীদের মেনে চলতে হবে
- যেকোনো ধরনের আঘাত থেকে নিজেকে রক্ষা করা।
- শিশুকে সুরক্ষিত রাখা।
- মাংসপেশিতে ইনজেকশন না দেওয়া।
- ছেলে শিশুদের সার্জারির আগে পারিবারিক ইতিহাস জেনে নেওয়া
- চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত ব্যথার ওষুধ না খাওয়া।
- আক্রান্ত স্থানকে বিশ্রাম দেওয়া ও সম্ভব হলে উঁচু করে রাখা।
- রক্তক্ষরণের স্থানকে চেপে ধরে রাখা।
- দ্রুত বরফ বা ঠাণ্ডা পানি দেওয়া।
- ব্যথা হলে প্যারাসিটামল খাওয়া।
- হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।
শেষ নয়