ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অবসরপ্রাপ্ত এক সেনা সদস্য। বিএনপি নেতার নির্দেশে ব্যবসায়ীর উপর হামলার ঘটনায় মামলা করলে বাদীর বাড়ি ভাংচুর করাসহ চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।ঝিনাইদহ জেলা ও শৈলকুপা উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এবং হাকিমপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জোয়ার্দ্দারের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার দুপুরে শৈলকুপা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন উপজেলার নাগপাড়া গ্রামের মনোব্বর হোসেনের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য বিল্লাল হোসেন। এ সময় তার সাথে একাধিক ক্ষতিগ্রস্থরা উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে সেনা সদস্য বিল্লাল হোসেন বলেন, আমার ছেলে রাকিবুল ইসলাম ২৪ মার্চ ২০২৫ সন্ধার দিকে শৈলকুপা থেকে বাড়ি ফেরার পথে চামটাইলপাড়া মোড়ে পৌঁছালে হত্যার উদ্দেশ্যে তার উপর হামলা করা হয়। বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম জোয়ার্দারের নির্দেশে নাগপাড়া গ্রামের ইয়ামিন, রাকিব, ইউসুপ মন্ডল, সেলিম, নাজমুল হোসেন, শহিদুল মন্ডল, গোলাম আলী ও মুসাসহ আরো কয়েকজন লোহার রড, হাতুড়ীসহ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়।গ্রাম্য রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে এই বিএনপি নেতা তার লালিত বাহিনী দিয়ে হাট-ঘাট বালিমহল দোকানপাট জমাজমিসহ বিভিন্ন দখলবাজি চাঁদাবাজি এবং সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে মরিয়া রয়েছে। তার সাথে যারা সামাজিক দলে যোগদান করতে রাজি হয়না সেসকল নিরিহ মানুষের উপর চলে নির্যাতন। ৫ আগষ্টের পর থেকেই নাগপাড়া গ্রামের সাবেক মেম্বর সিদ্দিক মন্ডল ও নজরুল জোয়ার্দ্দারের ভাতিজা নুরুজ্জামান জোয়ার্দ্দার এর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সন্ত্রাসী বাহিনী সম্প্রতি ইউনিয়নটির গুরুত্বপূর্ন বিভিন্ন গ্রামের হাটাবাজারে দখলবাজি চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে বেড়ায়। নজরুল ইসলামের রাজনৈতিক ডাকে সাড়া না দেওয়ায় তার পরিবারকে নিরাপত্তাহীন করেছে। ভুক্তভোগী আইনী সহায়তার জন্য শৈলকুপা থানায় একটি এজাহার দাখিল করার কারনে ২৫ মার্চ মঙ্গলবার ভোর রাতে উক্ত সন্ত্রাসীরা তার বাড়িঘর ভাংচুর লুটপাট করেছে বলে জানিয়েছেন। বিল্লাল হোসেন আরো বলেন, নজরুল জোয়ার্দ্দারের লালিত বাহিনীর বিরুদ্ধে এলাকার নির্যাতিত নিপিড়ীত মানুষ ভয়ে কেউ মুখ খোলেনা। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সাথে সাথে তার বাহিনীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে কথা বলায় গত ৩০ আগষ্ট ২০২৪ হরিহরা গ্রামের তারিকুল ইসলাম তুর্কি ও এ্যাডভোকেট ইশারাত হোসেন খোকনের বাড়ি ভাংচুর লুটপাট করেছে। ৮মার্চ সন্ধ্যা রাতে গোবিন্দপুর গ্রামের ব্যবসায়ী পিকুল হোসেনকে চরপাড়া ব্রীজে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষতার কারনে আটক করে মারধর করে। হরিহরা সাহেব আলী নামের এক সাধারণ কৃষকের বাড়ি গভীর রাতে ভাংচুর লুটপাট করেছে। ২৫ মার্চ সকালে খুলুমবাড়িয়া বাজারের ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেনের দোকান বন্ধ করে উক্ত দোকান ঘর ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে মারপিট করে দোকানের চাবি নিয়ে গেছে তার সন্ত্রাসী বাহিনী। ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ সকালে নাগপাড়া গ্রামে জমিজমার জের ধরে তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী রুহুল আমীনের ভাই বিল্লালকে খুন করার চেষ্টা করে। খুলুমবাড়িয়া বাজার ও এলাকার অনেক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ভয় দেখিয়ে গোপনে চাঁদাবাজি করেছে বলে অভিযোগ করেন। আশির দশক থেকেই রাজনৈতিক ও পারিবারিকভাবে বেপরোয়া সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত নজরুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার একজন স্বীকৃত রাজাকার পুত্র। তার বাবা সৈয়দ আলী রাজাকারও ছিলেন অত্যন্ত ঘৃনিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত সন্ত্রাসী। মূলত প্রভাবশালী এই রাজাকারপুত্র রাজনৈতিক ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এ যাবতকালের বহু মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে, যার প্রমান এলাকায় খোঁজ নিলে আরো তথ্য ও অভিযোগের সত্যতা মিলবে বলে সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়। এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার বলেন বাদীর বক্তব্য সঠিক নয়। সংবাদ সম্মেলনের খবর প্রচারকারী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তিনি মামলার হুমকি প্রদান করেন।