
সাইদ গাজী, স্টাফ রিপোর্টার।
ফরিদপুরের সালথায় আকিকার মাংস ফেরত দেওয়া নিয়ে বিএনপির দুইগ্রুপে সংঘর্ষের জেরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুক্রবার (৯ মে) রাতে সংঘর্ষ এবং পরদিন শনিবার (১০ মে) সকালে এই হামলার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষকারীরা হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও নগদ টাকা ও দামী মালামাল লুটপাট করে। এই ঘটনায় উভয় গ্রুপের মহিলাসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের রাঙ্গারদিয়া পশ্চিমপাড়ার মৃত তফছার মোল্যার দুই ছেলে ফারুক মোল্যা ও উজ্জ্বল মোল্যা। ফারুক মোল্যা স্থানীয় জালাল মোল্যার সমর্থক ও উজ্জ্বল মোল্যা স্থানীয় ইউপি সদস্য নান্নু মাতুব্বরের সমর্থক। গত শুক্রবার (২ মে) ফারুক মাতুব্বরের ছেলের আকিকার মাংস ছোট ভাই উজ্জ্বল মোল্যার বাড়িতে পাঠালে, বিরোধী পক্ষ হওয়ায় তা ফেরত দেয় উজ্জ্বল মোল্যা। এই ঘটনায় অপমানিত হলে ফারুক মোল্যা ও উজ্জ্বল মোল্যার মাঝে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরই জের ধরে শুক্রবার সন্ধার পর, নান্নু মাতুব্বরের পক্ষের লোকজন খালপাড়ার আজিজুর মোল্যা ও মিরাজ মোল্যাকে মারধর করে৷
এই ঘটনা নিয়ে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র ঢাল সড়কি নিয়ে সংঘর্ষ জড়িয়ে পরে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। এই ঘটনার জেরে শনিবার সকালে নান্নু মাতুব্বর তার লোকজন নিয়ে জালাল মোল্যার সমর্থকদের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। দুদিনের সংঘর্ষ ও হামলায় প্রায় অর্ধশতাধিক বাড়িঘরে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। এসময় মান্নান মোল্লা, লিয়াকত মাতুব্বর ও আজিজুর মোল্যার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। মান্নান মোল্লা ও লিয়াকত মোল্যার বাড়িতে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিলেও আজিজুর মোল্যার বাড়িতে ক্ষয়ক্ষতি হয়। এই ঘটনায় উভয় দলের মহিলাসহ কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছে। আহতেদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে এবং গুরুতর আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নান্নু মাতুব্বর বিএনপি নেতা প্রফেসর শাখায়াত হোসেন জয়নাল মোল্যার সমর্থক ও জালাল মাতুব্বর সোনাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাওলানা আজিজুল হকের সমর্থক।
সংঘর্ষ নিয়ে সোনাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ আজিজুল হক বলেন, নান্নু মাতুব্বর একসময় আওয়ামী লীগ করতো, বর্তমানে সে বিএনপিতে যোগ দিয়েছে। নান্নু মাতুব্বর বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক ভাড়া এনে আমার সমর্থকদের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে। তারা ১৫টি গরু লুট করে নিয়ে যায়, এর মধ্যে দুটি গরু ফেরত দিয়েছে। এছাড়াও নগদ টাকা ও দামী মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায়। আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং এর ন্যায় বিচার চাই।
সংঘর্ষের বিষয়ে বিএনপি নেতা প্রফেসর শাখায়াত হোসেন জয়নাল বলেন, গতকাল আমি ঢাকায় ছিলাম, সংঘর্ষ হয়েছে আমার বাড়ি থেকে ৪/৫ কিলোমিটার দুরে অন্য একটি গ্রামে। কিছু লোক সংঘর্ষ নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। আমি এর নিন্দা জানাই।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. আতাউর রহমান বলেন, রাঙ্গারদিয়া গ্রামে আকিকার মাংস নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে হাতাহাতির জেরে শুক্রবার রাতে ও শনিবার সকালে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে রাতে ও সকালে রাঙ্গারদিয়া গ্রামে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।