তানোরে চলতি মৌসুমে ধানের চেয়ে খড়ের দাম বেশি

প্রকাশিত: ১২:০৬ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৩১, ২০২৪

সুজন তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি:

অগ্রহায়ণে নবান্নের গন্ডি পার হয়ে পৌষের শুরুতে রাজশাহী তানোর উপজেলার অধিকাংশ এলাকার কৃষকই আমন ধান ঘরে তুলেছেন।চলতি মৌসুমে ধানের দামে মোটামুটি সন্তুষ্ট তানোর উপজেলার কৃষকরা।তবে বর্তমান বাজারে ধানের চেয়ে খড়ের চাহিদা বেশি থাকায় ধানের চেয়ে বেশি দরে খড় বিক্রি করতে পেরে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এলাকার কৃষকরা।বর্তমান সময়ে বাজারে প্রকারভেদে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ১৩৫০থেকে ১৪০০ শত টাকা দরে।এই হিসেবে প্রতি কেজি ধানের দাম পরে ৩৩থেকে ৩৫টাকা।বর্তমান বাজারে এক মণ ধানে যে পরিমাণ খড় হয় তা প্রতি গোছা বিক্রি হচ্ছে ১৮থেকে২২ টাকা দরে।সে হিসাবে বাজারে ১০০গোছার(এক মণ)দাম পড়ছে ১হাজার ৮০০টাকা থেকে ২হাজার ২০০টাকা।যে কারণে ধান বিক্রির পাশাপাশি খড় বিক্রিতেও লাভবান হচ্ছে কৃষকরা।সরেজমিনে উপজেলা তানোর,মুন্ডুমালা, কালিগঞ্জ,তালান্দ সহ বিভিন্ন এলাকার গ্রাম ঘুরে ও কৃষক দের সাথে কথা বললে তারা জানান,উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গবাদি পশুর খামার বেড়ে যাওয়ায় খড়ের দামও বেড়েছে।আগে আমরা শুধু ধান বিক্রিতেই ব্যস্ত থাকতাম। খড়ের তেমন চাহিদা না থাকার কারণে কিছু খড় আমাদের গবাদি পশুর জন্য রেখে বাকি খড় মাঠে থেকেই নষ্ট হয়ে যেতো।কিন্তু বর্তমানে ক্ষেত থেকে ধানকাটার পরনিজেদের চাহিদা মিটিয়ে যে খড় থেকে যায়,সেগুলো গো-খাদ্য হিসেবে বিভিন্ন এলাকার খামারিদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করা যাচ্ছে।উপজেলা লাহেড়ী পাড়া গ্রামের কৃষক সামাদ বলেন,এইবার আমি২০বিঘা জমিতে ধান করেছি।ফসলও মুটামুটি ভালই হইছে।বাজারে এখন মোটা ধানের দাম মণ প্রতি ১৩৫০থেকে ১৪০০টাকা দরে বিক্রি করছি।তবে ধানের দাম থেকে এইবার খড়ের দামবেশি পেয়েছি।কলমা গ্রামের কৃষক শহীদুল,জুয়েল ও নীরেন্দ্র এবং কামার গাঁ গ্রামের রিপন মিয়া,তুতা মিয়া,সুনীল বলেন,ধানের তুলনায় কয়েক বছর থেকেই খড়ের কদর বেশি।কয়েক বছর আগে মানুষ কে খড় বিনামূল্যে দিয়েছিলাম।এখন কেউ খড় চাইলে কষ্ট হয়।ধান দিতে রাজি কিন্তু খড় দিতে রাজি না।খড়ের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমরা ধান চাষে লাভবান হচ্ছি।এখন বিভিন্ন এলাকার খামারিরা ফসল কাটার পর মাঠ থেকেই খড় কিনে নিয়ে যায়।মোহনপুর বাজার থেকে খড় কিনতে আসা খামারি আরিফুল ইসলাম বলেন,গরু পালন করতে শীত মৌসুমে ঘাসের সংকট হয়।তাই আমার মতো অনেক খামারিই আমন মৌসুমে খড় কিনে রাখেন।লাখ টাকার খড় কিনে সারা বছর গরুকে খাওয়াতে হয়।বন্যার কারণে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় বরাবরের তুলনায় এবার খড়ের দাম বেশি।তিনি আরও বলেন,এবার খড়ের দাম দেখে মনে হচ্ছে গরুর জন্য খড় কেনা থেকে ধান কিনে রাখা ভালো।এখন এক কাউন খড়ের দাম ৬হাজার থেকে ৭হাজার।ধান যেখানে হাজার টাকা মণ,সেখানে এক ভ্যান(১০০গোছা)খড় কিনতে ভ্যান ভাড়াসহ দিতে হচ্ছে ধানের দ্বিগুণ দাম।এমন চলতে থাকলে আমাদের মতো খামারিদের টিকে থাকাই মুশকিল হয়ে যাবে।তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল্লাহ আহমেদ রাজশাহী সংবাদ ঢাকার টাইমস কে বলেন,কৃষকরা এখন ধানের চেয়ে খড়ের প্রতি খুবই যত্নশীল হয়েছেন।অনেকে খড় বিক্রি করেই ধান চাষের খরচ তুলছেন।এখন তারা ধান চাষে আরও আগ্রহী হচ্ছেন।