সৌদি আরবে দুই বাংলাদেশির মৃত্যু শ্রীপুরে দুই পরিবারে শোকের ছায়া ঢাকার টাইম ঢাকার টাইম প্রকাশিত: ৯:৪৬ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০২৪ আনোয়ার হোসেন, শ্রীপুর(গাজীপুর)প্রতিনিধি. সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের আম্বারিয়া এলাকায় এক ঘরে দুই বাংলাদেশী যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এমন খবরে দুই পরিবারের স্বজনরা শোকস্তব্ধ হয়ে পেড়েছে। শুধুই লাশ পাবার আশায় অপেক্ষার প্রহর গুনছেন স্বজনরা। নিহতরা হলো গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গোসিংগা ইউনিয়নের পটকা গ্রামের মো. শাজাহানের ছেলে মো. মাসুম(৪০),একই ইউনিয়নের গোসিংগা গ্রামের মো. মোকলেছ সিকদারের ছেলে মাকসুদুল হাসান সিকদার(২৩)। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত মাসুমের বাড়ি গিয়ে দেখা মেলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের। স্বজন প্রতিবেশীরা নির্বাক বসে আছে। ছেলের শোকে পাথর হয়ে গেছেন মা। প্রতিবন্দী শিশু কোলে হতাশ দাড়িয়ে আছেন মাসুমের স্ত্রী রত্না। মাসুমের মা পিয়ারা বেগম জানান, পোশাক কারখানায় চাকুরী করতো মাসুম। দুই সন্তানের জনক মাসুম সংসারের সুখের আশায় ধার কর্জ্জ করে দালালের হাতে তুলে দেন সাড়ে চারলাখ টাকা। সাত মাস পূর্বে পারি জমায় সৌদীতে। সেখানে গিয়ে মেলেনি কাজ। খেয়ে না খেয়ে কেটেছে প্রায় ছয় মাস। পরে মামতো ভাই জুয়েলের সহায়তা কাজ পায় মাসুম। নভেম্বর মাসে প্রথম ২৩হাজার টাকা পাঠায় মায়ের কাছে। সোমবার রাত সাড়ে এগারোটায় মাসুমের শেষ কথা হয় স্ত্রী রত্নার সাথে। বুধবার সকালে শুনতে পান মাসুমের মৃত্যুর খবর। তিনি আরো জানান, আমার ভাইয়ের ছেলে জুয়েলর মাধ্যমে জানতে পাই মঙ্গলবার সকালে ফোন করে মাসুমের সাথে কথা বলতে পারেনি সে।পরে বাসায় গিয়ে দেখে মাসুমের ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। ডাকা ডাকি করেও সাড়া মেলেনি । এক পর্যায়ে জুয়েল সৌদী পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙ্গে ওই ঘর থেকে মাসুম ও তার সাথে থাকা মাকসুদুলের মরদেহ উদ্ধার করে। জুয়েলের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন, ঘরে হিটার জালিয়ে ঘুমিয়ে ছিলো মাসুম ও মাকসুদুল। তার ধারণা তাপে ঘরের অক্সিজেন শূন্য হয়ে তাদের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। অপরদিকে মাকসুদুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় এক করুণ দৃশ্য। মা-বোন স্বজনরা ঘর-উঠান-আঙ্গিনায় বসে আহাজরী করছেন। ভাইয়ের জন্য হাওমাও করছেন বোন। স্বজনরা প্রতিবেশীদের মাঝে শোকের ছায়া। নিহতের মা রিনা বেগম জানান, নববধুকে রেখে প্রায় তিন বছর পূর্বে সৌদী পারিজমায় মাকসুদুল। সেখানে দুই বছর কাটে কষ্টে খেয়ে নাখেয়ে। পাঁচ লাখ টাকা দালালকে দিয়ে সৌদী যায় মাকসুদুল। টাকার মায়ায় দেশে ফেরেনি। সব শেষ এক বছর পূর্বে কোন ভাবে একটি কাজ যোগার করে সে। এতে কিছুটা আলোর মুখ দেখে পরিবার। সোমবার রাত নয়টার দিকে ভাই বোন সহ বাড়িরর সবার সাথে ভিডিও কলে কথা বলে মাকসুদুল। মঙ্গলবার রাত দুইটার দিকে সৌদী থেকে ফোন করে এক জন মাকসুদের মৃত্যুর খবরদেয়। নিহতের ছোটভাই রাতুল হাসান জানান, আমার ভাইয়ের সাথে একই ঘরে পটকা গ্রামের মাসুম থাকতো। সোমবার রাতে তারা ঘরে ইলেক্ট্রিক হিটার জালিয়ে ঘুমিয়ে পরে। পরদিন পুলিশ দরজা ভেঙ্গে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে। এখন শুধুই লাশ ফেরত পাবার প্রহর গুনছেন। কখন আসবে ভাইয়ের লাশ। গোসিংগা ইউনিয়নের প্যানের চেয়ারম্যান মো. ফারুক প্রধান জানান, পটকা ও গোসিংগা গ্রামের দুই ব্যক্তি সৌদীতে মৃত্যুর খবর পেয়েছেন। পরিবার দু’টিকে তার পক্ষথেকে সাহায়তা করবেন। শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ব্যারিষ্টার সজিব আহমেদ জানান, এ বিষয়ে নিহতদের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনিক ভাবে সহায়তা করবেন। Post Views: 0 SHARES সারা বাংলা বিষয়: