Md Md

Badsha

প্রকাশিত: ৫:৫৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০২৪

শৈলকুপায় আগামীকাল হানাদারমুক্ত দিবস

এম বাদশা মিয়া ঝিনাইদহ  :
আজ ১১ ডিসেম্বর শৈলকুপা হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর ঝিনাইদহ শহর হানাদারমুক্ত হলেও শৈলকুপা হানাদার মুক্ত হয় ৫ দিন পর ১১ ডিসেম্বর। তারও ৫ দিন পর সারা বাংলাদেশ হানাদার মুক্ত হয় ১৬ ই ডিসেম্বর। বাংলার আকাশে উদিত হয় লাল সবুজের পতাকা। স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানা আক্রমণ, গাড়াগঞ্জ, কামান্না, আলফাপুর ও আবাইপুরের যুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিতে আজও অম্লান হয়ে আছে। শৈলকুপা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার রহমত আলী মন্টু জানান, ১৯৭১ সালের ১ এপ্রিল যশোর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ভারী অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পাকিস্থানি হানাদার বাহিনী ঝিনাইদহ দখলের উদ্দেশ্যে এগিয়ে আসতে থাকলে বিষয়খালী ব্রীজের এপার থেকে মুক্তিযোদ্ধারা তাদেরকে প্রবল বাধা দেয়। এরপর ৪ এপ্রিল কুষ্টিয়া থেকে যশোর সেনানিবাসে ফিরে যাওয়ার প্রাক্কালে শৈলকুপার গাড়াগঞ্জের বড়দা ব্রীজে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীকে পর্যুদস্ত করে। মুক্তিযোদ্ধারা আগে থেকেই প্রস্তুতি মতো ব্রীজ ভেঙে চাটাই বিছিয়ে আলকাতরা লাগিয়ে দেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের অভিসন্ধি বুঝতে না পেরে পাক বাহিনীর গাড়ি চাটাইয়ের উপর উঠে গেলে গাড়িসহ পাকসেনারা নদীতে পড়ে যায়। এখানে গ্রামবাসী ও মুক্তিযোদ্ধাদের হাতে বহুসংখ্যক পাক আর্মি নিহত হয় ও ধৃত হয়।
১৬ এপ্রিল হানাদার বাহিনী আবারো বিষয়খালী বেগবতী নদীর তীরে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল বাধার সম্মুখিন হয়। এখানে প্রায় ৬ ঘন্টা তুমুল যুদ্ধে ৩৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ব্রীজের পাশেই তাদের গণকবর দেওয়া হয়। এ থেকেই জেলায় ছড়িয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধ। বিভিন্ন স্থানে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে। সে সময় উল্লেখযোগ্য যুদ্ধের মধ্যে ছিল বিষয়খালী যুদ্ধ, গাড়াগঞ্জ যুদ্ধ, শৈলকুপা থানা আক্রমন, কামান্না, আলফাপুর ও আবাইপুরের যুদ্ধ। ঝিনাইদহে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সুত্রে জানা গেছে, পহেলা এপ্রিল থেকে ষোল এপ্রিল বিষয়খালী যুদ্ধে ৩৫ জন, ১৪ অক্টোবর আবাইপুর যুদ্ধে ৪১ জন, ২৬ নভেম্বর কামান্না যুদ্ধে ২৭ জনসহ স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝিনাইদহ জেলায় ২৭৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আনেককে বিভিন্ন স্থানে গণকবর দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে আনেকের নাম ঠিকানা আজও মেলেনি। ৬ ডিসেম্বরের আগে ৩ ডিসেম্বর মহেশপুর, ৪ ডিসেম্বর কোটচাঁদপুর, ৫ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ এবং সর্বশেষ ১১ ডিসেম্বর শৈলকুপা উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়।