ঝিনাইদহে বাংলাদেশ বাঁওড় আন্দোলনের প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত

এম বাদশা মিয়া ঝিনাইদহঃ
বাঁওড়ের ইজারা বাতিল করে মৎস্যজীবীদের স্বার্থে জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন,
বাঁওড়ের ইজারা বন্ধ করে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের মাছ ধরার অধিকারের দাবিতে ‘বাংলাদেশ বাঁওড় মৎস্যজীবী আন্দোলন’ এর উদ্যোগে ৮ জানুয়ারি ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাঁওড় অঞ্চলের মৎস্যজীবীদের প্রতিনিধি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।বাংলাদেশ বাঁওড় মৎস্যজীবী আন্দোলনের আহ্বায়ক নির্মল হালদারের সভাপতিত্বে ও গবেষক সুজন বিপ্লবের সঞ্চালনায় আন্দোলনের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন বাংলাদেশ কৃষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবিদ হোসেন।প্রতিনিধি সভায় বক্তব্য রাখেন কৃষক সমিতি কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি খুলনা জেলার কৃষক নেতা এস এ রশিদ , কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কুষ্টিয়া জেলার কৃষক নেতা মো. হেলালউদ্দিন, কুষ্টিয়া জেলার সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান পিন্টু, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য যশোর জেলার সভাপতি আব্দুর রহিম, জেলা আহ্বায়ক লুৎফর রহমান, চুয়াডাঙ্গার মৎস্যজীবী নেতা ওমর আলী, জাতীয় পরিষদ সদস্য রফিকুজ্জামান লায়েক, বন্ধ চিনিকল চালুকরণ টাস্কফোর্স এর যুগ্ম আহ্বায়ক কাফী রতন, সদস্য সচিব ঝিনাইদহ জেলার মৎস্যজীবী নেতা নিত্য হালদার, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নান্নু, যুব ইউনিয়ন ঝিনাইদহ জেলার সভাপতি আবু তোয়াব অপুসহ বিভিন্ন বাওড়ের মৎস্যজীবী নেতৃবৃন্দ।প্রতিনিধি সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রকৃতির জলাধার মানবোনা টেন্ডার, বাঁওড় মৎস্যজীবীর ন্যায়সঙ্গত অধিকার, প্রচলিত ইজারা বাতিল করে বাঁওড় জলমহালে প্রকৃত মৎস্যজীবীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।ইজারাপ্রথা চালু থেকে বঞ্চনার ফলে ভূমিহীন, বেকার ও নিঃস্ব হয়ে গেছে বাঁওড় জেলে নরনারীগণ। বাঁওড়গুলোর প্রথাগত মালিকানা নিশ্চিত করতে ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠী ও রাষ্ট্রের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। সেক্ষেত্রে সকল বাঁওড়ে সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন। ইজারা প্রথায় সাধারণ মৎস্যজীবীরা তো টিকতে পারছেনা। বাঁওড়ের মালিকানা জেলেদের, বাঁওড় জেলেদের আজন্ম অধিকার, তাই এই জনগোষ্ঠীর জীবিকায়নকে নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এখানে জেলেদের মালিকানার স্বীকৃতি, প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, পুনর্বাসন করতে হবে। জেলে সম্প্রদায় ও রাষ্ট্র কর্তৃক উৎপাদনের অংশীদারত্বের চুক্তি অনুযায়ী উৎপাদনের ন্যায্য বন্টননীতি থাকা চাই। আর এগুলোর সাথে অবৈধ হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। পেশিশক্তি ও রাজনৈতিক দূর্বৃত্তায়ন মুক্ত নীতি গ্রহণ করতে হবে।নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, মৎস্যজীবীদের উপর অবৈধ হস্তক্ষেপের মাধ্যমে জমি দখল, বাঁওড়ে অবৈধভাবে মালিকানা আরোপ করা হয়। বিভিন্ন ইস্যুতে জেলেদের হুমকি ও বসতভিটা উচ্ছেদ, জীবিকায় বাঁধা প্রদানের স্থায়ী সমাধান করতে হবে। রাষ্ট্রীয় তদারকিতে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলেদের জীবন ও জীবিকার নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে। বাঁওড়কে দখলদারত্ব ও প্রভাবশালী ব্যক্তির প্রভাবমুক্ত করতে হবে। বাঁওড়কেন্দ্রিক জেলেদের জীবিকা, আবাসস্থলসহ যে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই তাদের সাথে আলোচনা ও সম্মতি সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।সভায় মৎস্যজীবীদের জীবন জীবিকার সংকট সমাধানে ৪ দফা দাবি উত্থাপন করা হয় ১. বাঁওড়সমূহে ইজারা পদ্ধতি পুরোপুরি বাতিল করে বাঁওড়ে জেলেদের ন্যায়সঙ্গত মালিকানার স্বীকৃতি দিতে হবে।২. বাঁওড়ে মাছ চাষে রাষ্ট্রের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে রাষ্ট্রের অর্থায়নে ও জেলেদের সাথে নায্য উৎপাদনের অংশীদারত্ব চুক্তির মাধ্যমে করতে হবে।
৩. সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় প্রকৃত বাঁওড় মৎস্যজীবীদের জন্য রেশনিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি না করে বাঁওড়ে মাছের প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
সভায় নির্মল হালদারকে আহ্বায়ক, সুজন বিপ্লবকে সচিব বিভিন্ন জেলার মৎস্যজীবী ও কৃষক প্রতিনিধিদের সদস্য করে কার্যনির্বাহী কমিটির গঠন করা হয়।
Post Views: 5