তানোরে আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা,লোকসানের আশঙ্কায় কৃষকরা

সুজন তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি:
রাজশাহীর তানোর বরেন্দ্র অঞ্চলে চলতি মৌসুমে আলুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিলেও বাজারমূল্য নিম্নমুখী হওয়ায় লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। জমিতে এখন শেষ মুহূর্তের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।আর মাত্র ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে আলু উত্তোলন শুরু হবে।কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়,চলতি ৩০-১-২৫ অর্থবছরে চলতি মৌসুমে আলু চাষ হয়েছে ১ হাজার ৩২৩ হেক্টর জমিতে।এতে ফলন ধরা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ২৫ মেট্রিক টন এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার ৫৭৫ মেট্রিক টন।আবার আগামী আলু চাষ করা হয়েছে ৭৫০ হেক্টর জমিতে। আগাম আলু উৎপাদন ফলন ধরা হয়েছিল হেক্টরে ১৭ থেকে ১৮ মেট্রিক টন।তানোর উপজেলার কামার গাঁ ইউনিয়নের কৃষ্ণ পুর গ্রামের কৃষক রবিউল ইসলাম রাজ্জাক বলেন,আমার ১৫ বিঘা জমিতে আলু আবাদ করেছি।গাছের অবস্থা ভালো থাকলেও খরচ অনেক বেড়েছে।গতবার কোল্ড স্টোর থেকে আলু বিক্রি করেছিলাম ৫০ টাকা কেজি দরে, কিন্তু এবার আলুর বাজারদর ২০-২৫ টাকার মধ্যে থাকায় খরচ উঠানো নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছি।এছাড়া পারিশো দূর্গা পুর গ্রামের ময়েজ উদ্দিন,সুফি কামাল ও আরিফ জানান,গতবার ১০ বিঘায় ৬ লাখ টাকা লাভ হলেও এবার খরচ বেশি এবং দাম কম থাকায় লোকসানের মুখোমুখি হতে হবে।একই ভাবে কামারগাঁ ইউপির আলাউদ্দিন বলেন,৪ বিঘা জমিতে আবাদে সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ হয়েছে।বর্তমান দামে খরচ উঠবে কিনা সেটি নিয়েই অনিশ্চয়তায় আছি।কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহমেদ বলছেন,কৃষকদের আবাদ বাড়ানোর পেছনে গত বছরের ভালো বাজারদর ভূমিকা রেখেছে।তানোর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি আকবর হোসেন ও রাকিবুল হাসান জানান,আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় রোগবালাই তেমন দেখা যায়নি।তবে আলুর দাম নিয়ে কৃষকরা হতাশ।কোল্ড স্টোরে আলু সংরক্ষণের খরচও বেড়েছে।স্টোর মালিকরা কেজি প্রতি খরচ ৪ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮ টাকা করেছেন,যা কৃষকদের আরেকটি দুশ্চিন্তার কারণ।রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে ছালমা বলেন,আলুর আবাদ লক্ষ্য মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে এবং ফলনের সম্ভাবনা ভালো। মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সহায়তা করা হচ্ছে। তবে বাজারদর নিয়ে কৃষকদের দুশ্চিন্তা রয়েছে।কৃষকদের মতে,বাজার দরের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা না গেলে বাম্পার ফলন সত্ত্বেও তারা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন।
Post Views: 21